২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

-

দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে সৈয়দ মো: গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেছেন।

মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, ‘আমি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ব্যক্তিগত কাজে তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেট আল রাজী হাসপাতাল এলাকায় যাই। সেখানে অবস্থানকালে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ব্রাউজের সময় দেখি যে গত ২৬ মার্চ (২০২৩) মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদটি প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রথম আলোর পত্রিকা অফিস থেকে শেয়ার করা হয়। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, ওই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির বলেছে, ‘পেটে ভাত না ফুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়।’

এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সংবাদটি দেশে-বিদেশে হাজার হাজার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেছে। এ ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পরে ৭১ টেলিভিশন চ্যানেল ও তাদের অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুর কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। নাম-পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম আলোর এ সংবাদে বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাদি মামলাটি করেছেন।

এদিকে ৭১ টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, প্রথম আলো পত্রিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। পত্রিকায় শিশুটির নাম জাকির হোসেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার নাম সবুজ আহমেদ। বাড়ি সাভার কুরগাঁও পাড়ায়। তার বাবা রাজমিস্ত্রি। মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে সবুজ মেজো।

প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর। অথচ সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল শেষে মাঝেমধ্যে তাকে ফুল বিক্রি করতে দেখা যায়।

এমনিভাবে ওই সংবাদে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব’। প্রকৃতপক্ষে ওই শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি।

শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে কোনো অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement