২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডাকাতদের কেউ পোশাককর্মী, কেউ রাজমিস্ত্রি : র‌্যাব

- ছবি - সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জে ২৫ হাজার ডিমবোঝাই একটি পিকআপে ডাকাতির সময় শুক্রবার রাতে ছয়জনকে আটক করেছে র‌্যাব। এদের একেকজনের পেশা একেক। কেউ পোশাককর্মী, কেউ গাড়িচালক। দিনে নিজ নিজ পেশায় থাকলেও বিভিন্ন সময় তারা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করেন।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

র‌্যাব জানায়, এই ডাকাত দলটি বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিল। তারা পেশায় কেউ পোশাককর্মী, কেউ গাড়িচালক, হেলপার আবার কেউ রাজমিস্ত্রি ও কাপড়ের দোকানের কাটিং মাস্টার। দিনে নিজ নিজ পেশায় থাকলেও বিভিন্ন সময় তারা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করেন।

গ্রেফতাররা হলেন ডাকাত দলের সরদার মুসা আলী (৪০), নাঈম মিয়া (২৪), শামিম (৩৫), রনি (২৬), আবু সুফিয়ান (২০) ও মামুন (২৪)। তাদের কাছ থেকে তিনটি চাপাতি, দুটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ছোরা ও একটি বাস জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাতে রূপগঞ্জের ভুলতা গোলাকান্দাইল এশিয়ান হাইওয়েতে র‌্যাব-১১ এর একটি দল টহল দিচ্ছিল। এসময় একটি ডিমবোঝাই পিকআপের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে তাকে থামান র‌্যাব সদস্যরা। তখন পিকআপ থেকে দুই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করলে তাদের আটক করা হয়।

আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে ‘যুব কল্যাণ এক্সপ্রেস লিমিটেডে’র একটি বাস নিয়ে এশিয়ান হাইওয়েতে ডিমের পিকআপের পিছু নেয়। একপর্যায়ে ভুলতা-রূপসী সড়কে পিকআপটির সামনে গিয়ে বাস দিয়ে পথরোধ করে। এরপর পিকআপের চালক ও তার সহকারীকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক পিকআপটি নিয়ন্ত্রণে নেয় ডাকাতরা। এসময় তাদের আরেকটি দল পিকআপের চালক ও সহকারীর হাত-পা বেঁধে মারপিট করে বাসে উঠিয়ে নেয়।

এরপর ডাকাত দলের সরদার মুসা ও তার প্রধান সহকারী নাঈম পিকআপটি নিয়ে গাউছিয়া-মদনপুরমুখী রাস্তায় নিয়ে যায়। আর ডাকাত দলের বাকি সদস্যরা পিকআপের চালক ও হেলপারকে বাসে করে মদনপুরের দিকে নিয়ে যায়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ডাকাতদের দেয়া তথ্যে পিকআপের চালক ও হেলপারকে উদ্ধারে মদনপুর যায় র‌্যাব। সেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে জব্দ করা হয় বাসটি। এসময় ডাকাতদলের সদস্যরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে র‌্যাব সদস্যরা ছয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। আর বাকি ৪-৫ জন বাস থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান। এরপর বাসের ভেতর থেকে পিকআপচালক ও তার সহকারীকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার শামিম ডাকাত সর্দার মুসার প্রধান সহযোগী। তিনি ডাকাতির সময় বাসটি চালান। ২০০৬ সালে স্ত্রীর হত্যার দায়ে সাত বছর কারাগারে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

অন্যদিকে গ্রেফতার রনি ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাসচালকের হেলপার। আর নাঈম পেশায় একজন গাড়িচালক। গ্রেফতার মামুন স্থানীয় একটি সেলাই কারখানায় কাটিং মাস্টারের কাজ করেন।

ডাকাতির কাজের জন্য বাসটি তারা কীভাবে পেলেন- এমন প্রশ্নে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি মালিকের কাছ থেকে বাসটি নিয়ে গত দেড় বছর ধরে ডাকাতি করে আসছিল। কিন্তু বাস মালিক জানতেন না তার বাস দিয়ে যাত্রী পরিবহন না করে ডাকাতি হয়। তবে বাসের সব কাগজপত্র ঠিক ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement