১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সামিয়া রহমানের গবেষণা জালিয়াতি : সব নথি হাইকোর্টে

- ছবি - সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষিকা সামিয়া রহমানের গবেষণা জালিয়াতি সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনসহ যাবতীয় নথি হাইকোর্টে এসেছে। আগামী রোববার (২৪ অক্টোবর) হাইকোর্টে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

আজ বৃহস্পতিববার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সামিয়া রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিন আদালতে সামিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নাঈম আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, তলবের পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথি ও অন্যন্য প্রতিবেদন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করা হয়। আজ ওই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পরে আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুত নই বলে আগামী রোববার শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর সামিয়া রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পদাবনতি দেয়ার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসাথে হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথিও তলব করেন আদালত। আগামী ২১ দিনের মধ্যে এসব নথি হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।

ওইদিন সামিয়ার রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম জানান, এর আগে গত ৩১ আগস্ট পদাবনতি দেয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সামিয়া রহমান। ওই রিটের শুনানি নিয়ে তার পদাবনতির এই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসাথে সামিয়া রহমানের গবেষণা জালিয়াতি সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, গঠিত ট্রাইব্যুনালের নথিসহ সব কাগজপত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

গত ২৮ জানুয়ারি ঢাবির সিন্ডিকেট সভায় গবেষণা জালিয়াতির দায়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমানের পদাবনতি করে তাকে ‘সহকারী অধ্যাপক’ করা হয়।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর সামিয়া রহমান ও অপরাধবিজ্ঞান (ক্রিমিনোলজি) বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের 'A new dimension of Colonialism and Pop Culture : A Case Study of the Cultural Imperialism' নামক আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ সোশ্যাল সাইন্স রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়, যা ১৯৮২ সালে শিকাগো জার্নালে প্রকাশিত মিশেল ফুকোর 'Subject and Power' প্রবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল করা।

২০১৭ সালে এক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ চুরির অভিযোগের কথা জানায় ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। ওই অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট তার পদাবনতির সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে সিন্ডিকেট শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই সামিয়া রহমান দাবি করছেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ নিয়ে গত ১ মার্চ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তিনি। সেখানে নিজের পক্ষে দালিলিক প্রমাণও তুলে ধরে সামিয়া রহমান।


আরো সংবাদ



premium cement