১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মামুনুলের নির্দেশে বাদির মোবাইল-টাকা চুরি করে ৭০-৮০ জন ছাত্র : পুলিশ

রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়। - ছবি : নয়া দিগন্ত

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক এবং তার ভাই মুহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রহমানিয়া মাদরাসার ৭০-৮০ জন ছাত্র মামলার বাদির মোবাইল ও টাকাসহ কয়েকটি জিনিস চুরি করেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

সোমবার মামুনুল হককে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল হক রিমান্ড আবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেন।

আবেদনে বলা হয়, ‘গত বছরের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ এলাকায় সাত গম্বুজ মসজিদে রাত সাড়ে ৮টায় আসামি মাওলানা মামুনুল হক ও তার ভাই মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার ছাত্র আসামি ওমর এবং ওসমান বাদি ও তার সাথে থাকা অন্যদের মসজিদে আমল (ধর্মীয় কাজ) করতে নিষেধ করেন। তাদের মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন আসামিরা। বাদি প্রতিবাদ করলে মামুনুল হক ও তার ভাই মাহফুজুল হকের নির্দেশে মাদরাসার আরো ৭০-৮০ জন ছাত্র বের হয়ে বাদিকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করেন। আসামি ওমর ও ওসমান তাদের হাতের লাঠি দিয়ে বাদিকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে মসজিদের ভেতরে শুয়ে পড়েন বাদি।’

‘এরপর আসামিরা বাদির কাছে থাকা একটি স্যামসাং মোবাইল, নগদ ৭ হাজার টাকা, ২০০ ডলার ও ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ডেবিট কার্ডসহ বাদির মানিব্যাগ নিয়ে যান। বাদিকে পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন আসামিরা।’

আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আসামির (মামুনুল হক) বিরুদ্ধে মামলায় জড়িত থাকার সাক্ষ্যপ্রমাণ প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়। আসামি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মভীরু মুসলমান ও মাদরাসার ছাত্রদের উস্কানি দেন। আসামির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আসামি মামলার ঘটনার সাথে জড়িত ও অন্যান্য আসামিদের চেনেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও তাদের গ্রেফতারসহ চোরাই মাল উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে এবং অপর আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে মামুনুল হকের সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।’

এর আগে সোমবার বেলা ১১টার কিছু পরে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

জানা যায়, মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাতে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি ও ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগের অভিযোগ এনে স্থানীয় এক ব্যক্তি মোহাম্মদপুর থানায় মামুনুলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

রোববার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement