১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোনো মুসলিম হিন্দু নারীকে বিয়ে করতে পারে কিনা

মত দেবেন চার অ্যামিকাস কিউরির মতামত চায় হাইকোর্ট
কোনো মুসলিম হিন্দু নারীকে বিয়ে করতে পারে কিনা - ছবি : সংগৃহীত

সম্পত্তি প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে একটি পারিবারিক মামলার রায় দিতে চার অ্যামিকাস কিউরির মতামত চেয়েছেন হাইকোর্ট। দুই বোনের বাবা পরলোকগত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দ্বিতীয় বিয়ে এবং সেই স্ত্রীকে সম্পত্তি উইল করে দেয়ার আইনগত বৈধতা বিষয়ে মতামত দেবেন অ্যামিকাস কিউরিরা। এ জন্য চার আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি মনোনীত করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। অপরদিকে জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান।

শুনানিতে মনজিল মোরসেদ আদালতকে বলেন, ভারতীয় নাগরিক অঞ্জু কাপুর স্ত্রী দাবির পক্ষে যে ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করেছেন, এর কোনো আইনগত সুযোগ নেই।

এছাড়া অঞ্জু কাপুর আদালতে স্ত্রী হিসেবে গুলশানের পুরো বাড়িটি তার নামে উইল করেছেন বলে ডকুমেন্ট দাখিল করেছেন। আইন অনুযায়ী স্বামী মোস্তফা জগলুল তার পুরো সম্পত্তি স্ত্রীকে উইল করতে পারেন না। উইল করতে চাইলে তিন ভাগের এক অংশ উইল করতে পারেন। তখন অঞ্জু কাপুরের আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান আদালতকে বলেন, মোস্তফা জগলুল তার মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে বাড়িটি উইল করেছেন। সুতরাং মেয়েদের কোনো অধিকার নেই। পরে আদালত এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানার জন্য চার অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ করেন।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৮৭২ অনুসারে কোনো মুসলিম কোনো হিন্দু নারীকে বিয়ে করতে পারে কিনা এবং সে স্ত্রী হিসেবে তাকে দেয়া জগলুল ওয়াহিদের সম্পূর্ণ বাড়ি উইল করার আইনগত ভিত্তি বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য চারজন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগামী ১২ই জানুয়ারি পরবর্তী আদেশের তারিখ ধার্য রেখে সে পর্যন্ত দুই বোনকে নিরাপত্তা দিতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংকে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের অ্যাকাউন্ট থাকলে এবং দুইপক্ষ কোনো স্টেটমেন্ট চাইলে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজার তা দেবেন। পরে দুইপক্ষ তা আদালতে দাখিল করবেন। একইসঙ্গে সিটি ব্যাংকের ফাইল আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে গত ২৬শে অক্টোবর সন্ধ্যায় অনতিবিলম্বে ওই দুই বোনকে তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাসায় প্রবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ওই বাড়িতে তাদের প্রবেশ ও অবস্থান নিশ্চিত করার পর রাতেই গুলশান থানার ওসিকে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসারকে টেলিফোনে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement