হাইকোর্টে ড. ইউনূসের আবেদনের শুনানি শেষ আদেশ ২১ জুলাই

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে নোবেলজয়ী, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। উভয়পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে আদালত আগামী ২১ জুলাই আদেশের দিন ঠিক করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে আদেশের দিন ঠিক করেন।
এদিন শুরুতে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না মর্মে রুল জারির আবেদন করেন। তিনি বলেন, আমরা আইনগত বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেছি। ৪৩৭ কোটি টাকা ১৫৬ জন কর্মচারীকে দেয়া হয়েছে চেকের মাধ্যমে। ৫৬১ ধারায় আইনি বিষয় নিয়ে আমরা এসেছি।
অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও দুদকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ড. ইউনূসের আবেদন খারিজ করার আবেদন করেন। তারা বলেন, তাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে সেটা নিম্ন আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে। এখানে রুল জারি করার কোনো প্রয়োজন নেই।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ২১ জুলাই আদেশের দিন ধার্য করেন।
এর আগে সোমবার ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মামুন হাইকোর্টে এ আবেদন করেন। তিনি জানান, ১৪ জনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তা চ্যালেঞ্জ করে এবং সম্পূর্ণ অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। এ আবেদনে আইনগত বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
গত ১২ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেন আদালত। একই সাথে আগামী ১৫ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা এ মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত ২৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়।
চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো: শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো: মাইনুল ইসলাম।