তিন বছরেই সীমাবদ্ধ থাকছে শিক্ষক নিবন্ধনের মেয়াদ
আবেদন থাকলেও আপাতত বাড়াবে না এনটিআরসিএ- শাহেদ মতিউর রহমান
- ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
শিক্ষক নিবন্ধন সনদের মেয়াদ আপাতত তিন বছরের বেশি কার্যকর থাকছে না। যদিও বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। তবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। এনটিআরসিএ সূত্র জানিয়েছে, আগের ঘোষণা অনুযায়ীই শিক্ষকদের পরীক্ষা দেয়ার পর নিবন্ধন সনদের মেয়াদ হবে ইস্যুর তারিখ থেকে তিন বছর। একই সাথে নিবন্ধন সনদ পাওয়ার পর নিয়োগ সুপারিশের জন্য প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায়ও বহাল আছে। রায়ের বাইরে কোনো কিছু করার আইনগত সুযোগ নেই। এনটিআরসিএর ২০১৫ সালের সংশোধিত পরীক্ষা বিধিতেও সনদের মেয়াদ তিন বছর করা হয়েছে।
এ দিকে শিক্ষক নিবন্ধনের মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়াতে এবং সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলেও তাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যাচের উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পক্ষ থেকে জোর দাবি রয়েছে। গত ৭ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধনধারী প্রার্থীরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে দাবি জানান। অন্যথায় তারা আগামী ১৫ জুলাই মানববন্ধন করে সেখান থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণার দেন।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিবন্ধন সনদ পেয়েও শিক্ষক পদে নিয়োগ না পেয়ে অনেকের বয়স এখন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু প্রাথমিক সনদ নিয়ে তারা আবারো শিক্ষক পদে যোগদান করতে চান। আর এই দাবিতে আগামী ১৫ জুলাই ঢাকায় মানববন্ধন করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকজন প্রার্থী জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার দাবিতে ১৫ জুলাই এনটিআরসিএর অফিসের সামনে মানববন্ধন করবেন তারা। নিয়োগ না পাওয়া শিক্ষকরা জানান তারা সবাই বেসরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রার্থী হওয়ার আবেদন করার জন্য নিবন্ধন পরীক্ষায় (১ম থেকে ১২তম) উত্তীর্ণ হয়ে প্রাক-যোগ্যতার সনদ পাওয়া। তাদের সবারই বেসরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের বয়স পেরিয়ে গেছে অনেক আগে। তাদের সনদেরও মেয়াদ নেই।
অপর দিকে এনটিআরসিএ থেকে জানানো হয়েছে, আগে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দুই রকম হতো। একটা প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারনী। মানে ওই সনদ থাকলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারতেন। আর চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেয়া লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হতো। ২০০৫ সালে শুরু হয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবরে গেজেট জারির আগ পর্যন্ত শিক্ষক নিবন্ধনের প্রাক- যোগ্যতা নির্ধারণী সনদ দেয়া হতো। সেই পরীক্ষাগুলো ১ম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নামে পরিচিত। আর ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর থেকে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ।
মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন সনদধারীদের দাবি প্রসঙ্গে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, লেবু বেশি চিপলে তিতা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণদের অবৈধ দাবি মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চেয়ারম্যান আরো বলেন, ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ থেকে শুধু প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করা হতো। আর নিয়োগের জন্য সুপারিশের দায়িত্ব তখন এনটিআরসিএর ছিল না। সেই সময়ে নিয়োগের দায়িত্ব ছিল সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির। তাই ওই সনদপত্র কোনোভাবে চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না। মেয়াদোত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিও যৌক্তিক নয়। কিন্তু কিছু ব্যক্তি ও পেশাজীবী অসৎ উদ্দেশ্যে নিবন্ধিত প্রার্থীদেরকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে এনটিআরসিএর স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এনটিআরসিএ মনে করছে কিছু ব্যক্তি (রিট ব্যবসায়ী আইনজীবী) প্রার্থীদের মামলায় জিতিয়ে দেয়ার টোপ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে। কিন্তু এনটিআরসিএ নির্দিষ্ট আইন-কানুন ও আদালতের আদেশ সম্পূর্ণভাবে প্রতিপালন করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগে বদ্ধপরিকর।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা