সুবর্ণচরে বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা : রামুতে যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:৫৭
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নরসিংদীর শিবপুরে এক সবজি বিক্রেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। কক্সবাজারের রামুতে এক যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক বৃদ্ধকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর রশিদ গ্রামের নিহতের নিজ বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ এ লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় নিহত আব্দুল খালেক ওরফে খাজা মিয়া উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর রশিদ গ্রামের খালেক মিয়ার বাড়ির মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এক সময়ে স্থানীয় বাজারের চা দোকানদার ছিলেন খাজা মিয়া। স্ত্রী কমলা বেগম কাঞ্চনসহ নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। শনিবার রাতে বাজার থেকে তিনি আর ঘরে আসেননি। রোববার সকালে তার স্ত্রী ফজর নামাজ পড়তে উঠে স্বামীকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে সকাল ৬টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে স্বামীর গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
শিবপুর (নরসিংদী) সংবাদদাতা জানান, নরসিংদীর শিবপুরে পূর্বশত্রুতার জের ধরে মারুফ (২৫) নামের এক সবজি বিক্রেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। রোববার শিবপুর সদর রোড এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী ধিরা ঘোষের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মারুফ শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের সৈয়দ নগর গ্রামের মৃত মোশাররফ হোসেনের ছেলে। শিবপুর বাসস্ট্যান্ড সিএনবি অফিসে তার পিতার চাকরির সুবাধে সে সিএনবি অফিস এলাকায় কোয়ার্টারে মা-বোনের সাথে বসবাস করত। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ৪ এপ্রিল শিবপুর বাজার সিলভার পট্টির একটি দোকানে শওকত আলী নামের একজনকে কুপিয়ে আহত করার মামলার ২নং আসামি ছিলেন মারুফ। মামলার পর থেকে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে। শনিবার রাতে সদর রোড এলাকায় ধিরা ঘোষের বাড়ির দোতলায় অবস্থান করছিল সে, শওকত আলীর লোকজন জানতে পেরে রোববার সকালে পুলিশ নিয়ে গেলে পুলিশ অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে চলে যায়। এর পরে ১১টার দিকে ফ্ল্যাট বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারুফকে দেখতে পায় তারা। পরে তাদের অন্য সহযোগীদের খবর দিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে ১৫-২০ জন কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রকাশ্য দিবালোকে মারুফকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মারুফকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে পূর্ব বিরোধের জেরে আফরোজ মিয়া (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গনকিরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আফরোজ মিয়া একই এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত আফরোজের আরও তিন ভাই। তারা হলেন, আসকির মিয়া (৫০), তাজুল ইসলাম (৩৮) ও নাসির মিয়া (২৭)। তারা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শাহেনা বেগম বাদি হয়ে চুনারুঘাট থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘দোকানের পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের বিচার করছিলেন আমর স্বামী। এই ক্ষোভে অভিযুক্ত রতনের শ্বশুর, শ্যালকসহ শ্বশুর পক্ষের আত্মীয়-স্বজনরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
মামলা ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জুলাই ওই এলাকার ইসহাকের মেয়ের জামাই রতন মিয়া স্থানীয় শিরিনার দোকান থেকে বাকিতে ২০০ টাকার সদাই করেন। পরদিন বিকেলে টাকা চান দোকানদার শিরিনা। ওই সময় টাকা পরিশোধ করতে অনীহা প্রকাশ করেন রতন মিয়া। এনিয়ে শিরানা ও রতনের মধ্যে বাগি¦তণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিরিনার দোকানে ভাঙচুর চালায় রতন। ওই সময়ে উপস্থিত ছিলেন নিহতের ভাই তাজুল মিয়া। তিনি রতনকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে শিরিনার টাকা পরিশোধ করতে বলেন। এ সময় তাদের মধ্যেও বাগি¦তণ্ডা হয়। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মুরুব্বিরা বিরোধ নিষ্পত্তি করেন এবং ২০০ টাকা শিরিনা দোকানদার পাবে মর্মে সিদ্ধান্ত দেন।
এই ক্ষোভে শনিবার রাতে নিহত আফরোজের ঘরে ঢিল ছুড়ে অভিযুক্ত রতন। বিষয়টি রতনের শ্যালক রুবেলকে জানানো হয়। এ নিয়ে ফের বাগি¦তণ্ডা শুরু হয়। এরপর উভয়ের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন আফরোজ মিয়া। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
ঈদগাঁও (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের রামুতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার উপজেলার রশিদ নগরের ধলির ছড়া এলাকায় রেল লাইনের পাশ থেকে মামুন (৩০) নামে এ যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মামুন কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকার মৃত নবী হোসেনের ছেলে। মামুন শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, মানুন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে কক্সবাজার শহরের দিকে যায়। বের হওয়ার পর থেকে রাতে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রোববার সকালে হাত-পা বাঁধা লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। ঘটনাটি পুলিশকে জানালে তারা লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
রামু থানার ভাপরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত যুবককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। শরীরে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা