১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
কৃষিক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি

এআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন এসিআইর আনসারী ও সাহিদাসহ ২২ জন

-

বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজবীজ চাষ করে সফল চাষি হিসেবে দেশজুড়ে আলোচিত ফরিদপুরের সাহিদা বেগম। ২০০৪ সালে মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ শুরু করেন। বাড়ির পাশের একজনকে পেঁয়াজবীজ চাষ করতে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ পথে পা বাড়ান তিনি। শুরুর বছরেই সফলতা পেয়ে আর থামেননি। ফরিদপুর পৌরসভার গোবিন্দপুর গ্রামের ব্যাংকার স্বামী মো: বক্তার হোসেন খানের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া চার একর জমি এবং পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে লিজ কিংবা বর্গা নিয়ে চাষাবাদ সম্প্রসারিত করতে থাকেন তিনি। এখন তিনি দেশের অন্যতম বড় পেঁয়াজবীজ চাষি। দেশের পেঁয়াজবীজের চাহিদার একটি অংশ জোগান দেন তিনি। ২০২০-২১ অর্থবছরে পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করে মোট এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা আয় করেন খান বীজ ভাণ্ডারের এই স্বত্বাধিকারী। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন অনেক মানুষের। কৃষিক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সফল এই পেঁয়াজচাষি পাচ্ছেন এবার ‘এআইপি’ সম্মাননা।
‘ক’ বিভাগের কৃষি ক্যাটাগরিতে (উদ্ভাবন জাত/প্রযুক্তি) এআইপি পুরস্কার পাচ্ছেন এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট এবং এসিআই অ্যাগ্রোলিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী (এ কে এম এফ এইচ আনসারী)। বাংলাদেশে কৃষিযান্ত্রিকীকরণ, জাত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে যাচ্ছে এসিআই। বিগত প্রায় ৩৫ বছর ধরে এসিআই-এর অন্যতম কর্ণধার এইচ আনসারী কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও সম্প্রসারণে অবদান রেখে যাচ্ছেন।
‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা, ২০১৯’ অনুযায়ী এ সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। গত ২৪ জুন তালিকাটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ অনুবিভাগ) মলয় চৌধুরী নয়া দিগন্তকে জানান, দ্বিতীয়বারের মতো কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এআইপি সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। এবার পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ২২ জন এ সম্মাননা পাচ্ছেন। আগামী ৭ জুলাই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীতদের হাতে এআইপি কার্ড তুলে দেয়া হবে। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহিদ এতে প্রধান অতিথি থাকবেন।
বাগেরহাট ফকিরহাটের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশও সম্মাননার জন্য মনোনীত হয়েছেন।
কৃষি উৎপাদন/বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পাচ্ছেন টাঙ্গাইল মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো: ছানোয়ার হোসেন, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনকারী উদ্যোক্তা সাহিদা বেগম, খুলনা ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর মালিক মো: রুহুল আমিন, সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জের মো: সাখাওয়াত হোসেন, পাবনার ঈশ্বরদীর সফল দুগ্ধ খামারি মো: আমিরুল ইসলাম, নোয়াখালী বেগমগঞ্জের মাছুদুল হক, ঠাকুরগাঁও সদরের কৃষি উদ্যোক্তা মো: রফিকুল ইসলাম, সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জের আরেক সফল কৃষি উদ্যোক্তা মো: সিরাজুল ইসলাম রেখন, ফলচাষি শেরপুরের মো: হযরত আলী।
‘রফতানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন’ ক্যাটাগরিতে এআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন গাজীপুর সদরের বনসাইশিল্পী কে এম সবুজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মোহা: রফিকুল ইসলাম।
স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি (ফসল/ মৎস্য/প্রাণিসম্পদ/বনজসম্পদ উপখাতভুক্ত) সংগঠন ক্যাটাগরিতে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, চট্টগ্রামের পরিবেশ বিষয়ক সংগঠক সাহেলা আবেদীন (রীমা) ও সাতক্ষীরা কলারোয়ার একজন সফল নারী কৃষি উদ্যোক্তা শিখা রানী চক্রবর্তী।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের মধ্য খেকে এআইপি পদক পাচ্ছেন নীলফামারীর ডোমারের জৈব সার উৎপাদক ও গবেষক রাম নিবাস আগরওয়ালা, ঢাকার নবাবগঞ্জের কমলাকান্দার অমিত ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মায়া রানী বাউল ও পাবনা আটঘড়িয়ার সফল বীজ উৎপাদনকারী মো: আব্দুল খালেক।


আরো সংবাদ



premium cement