১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মিয়ানমারে ২০২৫ সালে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি জান্তা প্রধানের

-


মিয়ানমারে আগামী বছর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং। শনিবার মান্দালয় অঞ্চলের মেইকটিলা শহরে জান্তা কর্মী ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করার সময় এই প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সাল উল্লেখ করলেও, নির্দিষ্ট কোনো মাসের কথা উল্লেখ করেননি তিনি। ইরাবতী।
ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে জান্তা বাহিনীর পাঁচ দফা রোডম্যাপের মধ্যে নির্বাচনও রয়েছে। তবে এর আগে দেশে চলমান অস্থিরতাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে বারবার নির্বাচন পিছিয়েছেন জান্তা প্রধান। এর আগে তিনি বলেছিলেন যে, এই বছরের অক্টোবরে আদমশুমারির পরে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের জুলাইয়ে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে মিন অং হ্লেইং বলেছিলেন, দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না ফিরলে নির্বাচন হবে না।

এ দিকে সম্প্রতি জান্তা প্রধান স্বীকার করেছেন যে, ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অপারেশন-১০২৭ চলাকালীন উত্তর শান রাজ্যের অসংখ্য শহর এবং রাখাইন ও চিন রাজ্যের ১০টি টাউনশিপ আরাকান সেনাবাহিনীর দখলে চলে গেছে। অন্য দিকে রাখাইন রাজ্যের অর্ধেকই হারিয়েছে জান্তা। সেই সাথে চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও উত্তরের শান রাজ্যে আবারো উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কাছে জান্তার লাগাতার পরাজয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এমন পরিস্থিতিতে অক্টোবরের মধ্যে আদমশুমারি পরিচালনা, ভোটার তালিকা তৈরি ও নির্বাচন কিভাবে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার ও বিপ্লবী বাহিনী বলছে, জান্তা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হবে না।
মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর। সেবার জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। এরপর ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।
ওই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। অভ্যুত্থানের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।

রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ৬
ইরাবতী আরো জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ছয়জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত তিন দিনে টাংআপ শহরে চালানো হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, মঙ্গলবার পাণ্ডিন দ্বীপের কানসেইক গ্রামে বিমান হামলায় দুই কিশোর ও এক নারী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন আরো কয়েকজন। বিমান হামলার পর ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান বহু বাসিন্দা।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, এটি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সামরিক জান্তার ইচ্ছাকৃত আক্রমণ। এই হামলায় বেশ কিছু ঘরবাড়িও ধ্বংস হয়েছে। এর আগে, আরাকান আর্মির সাথে সংঘর্ষের পর গত শনিবার রাতে টাংআপ শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে থিন কি মেকিং গ্রামে বিমান হামলা চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এতে দুই নারী নিহত হন। একই দিন ইয়াওয়ার থিট কেল গ্রামে চালানো বিমান হামলায় আহত হয় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সেও। এ নিয়ে গত তিন দিনে রাখাইনে বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ছয়ে পৌঁছাল।
এর আগে, গত ৮ ও ১১ জুন টাংআপের উপকণ্ঠে গোলাবর্ষণ এবং শনিবার সকালে বিমান হামলা চালিয়েছিল জান্তা বাহিনী। শহরটিতে দু’পক্ষের মধ্যে ওটাই ছিল প্রথম লড়াই। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে টাংআপ ইউনিভার্সিটির কাছে সামরিক জান্তা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে পরে ব্যাপক গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা চালায় জান্তা বাহিনী।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement