১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা ফিলিস্তিনের জন্য দোয়া

-

ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ পালিত হয়েছে গতকাল শনিবার। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে সৌদি আরবের মক্কার অদূরে আরাফাতের প্রান্তরে সমবেত হন প্রায় ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলিম। সেখানে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধনিতে মুখরিত করে তোলেন হাজীরা। মসজিদে নামিরায় হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন হজের ইমাম। এ ছাড়া নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেছেন। দোয়ায় ফিলিস্তিনিদের স্মরণে রাখতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে খুতবা শুরু হয়। চলে প্রায় আধাঘণ্টা। এবার হজের খুতবা দেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব ড. শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি। বাংলাসহ প্রায় ৫০টি ভাষায় এটি অনুবাদ করে শোনানো হয়।
খুতবায় তিনি বলেন, হে মানুষ, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:-এর আনুগত্য করো। কুরআনে বলা হয়েছে যে- ফেতনা-ফাসাদ থেকে দূরে থাকো। আর যে অন্যায় করবে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর মালিক। তিনি আমাদের জন্য রহমত হিসেবে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। কুরআন এমন একটি গ্রন্থ যার প্রতিটি আয়াত প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ। এই কুরআন মানুষকে সরল পথ দেখায়। খুতবায় তিনি বলেন, ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং বিধান শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। তাকওয়া মানুষকে সফলতা ও মুক্তি দেয়, তাকওয়া অবলম্বনকারীরা কিয়ামতের দিন দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। সে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না। যে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে তাকে প্রতিদান দেবেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা হজরত মোহাম্মদ সা:-কে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। যারা নবীজি সা:-কে সম্মান করবে, ঈমান আনবে এবং আল্লাহ হেদায়েত স্বরূপ যে কুরআন নাজিল করেছেন তার বিধান মেনে চলবে তারাই সফল।
হজের খুতবায় তিনি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য রহমত কামনা করে দোয়া করেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুসলমানরা যুদ্ধের কবলে। তারা বিপর্যস্ত। তাদের খাওয়ার পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পৃথিবীর সবধরনের আরাম ও সুখ থেকে তারা বঞ্চিত। তাদের জন্য দোয়া করুন। বিশ্ব মুসলিমের কাছে এটা তাদের পাওনা।
তিনি বলেন, যারা ফিলিস্তিনিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন, অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহযোগিতা করছেন, তারাও দোয়ার হকদার। এছাড়াও যারা হজযাত্রীদের সেবা করছেন তারাও দোয়ার হকদার।
এর আগে সকালে মিনা থেকে লাখ লাখ হাজী লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করেন। মিনা থেকে আরাফাত প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ ছেয়ে যায় ইহরামের শুভ্রতায়। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বাসে করে আবার কেউ কেউ ট্রেনে যান আরাফাতের ময়দানে। একসাথে লাখ লাখ মানুষের যাত্রার ফলে প্রচণ্ড ভিড় লাগে আরাফাতের রাস্তায়।
খুতবার পর মসজিদে নামিরায় সমবেত মুসলমানরা এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ একসাথে জামাতে আদায় করেন। যাদের অবস্থান দূরে তারা নিজের তাঁবুতে আলাদাভাবে আদায় করেন জোহর এবং আসরের নামাজ।
সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পর হজযাত্রীরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেন। মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় একসাথে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায়ের পর সেখানেই খোলা আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করবেন। এর আগে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপের জন্য তারা সেখান থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন। এর পরের দিন হজযাত্রীরা ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় অবশ্যই মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। এরপর তারা যাবেন মিনায়।
মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছোঁড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশ্যে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসূলুল্লাহর (সা:) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডনের পর গোসল করবেন। নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এরপর হাজীরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলবেন। এরপর হাজীরা মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবেহ সাদিকের পর থেকে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। কাবা শরিফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাই’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে।
হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারো ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তারা মিনা ত্যাগ করবেন। ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময়ে কাবা শরিফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।


আরো সংবাদ



premium cement
রোববার থেকে ঢাকা-গাজীপুর রুটে চলবে বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিস জামায়াত-শিবিরের ৭ নেতাকর্মীর খুনিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ বিজয় দিবসে জেলা-উপজেলায় বিজয়মেলা হবে শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা দোয়ারাবাজার সীমান্তে বিজিবির অভিযানে অর্ধকোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে জাতীয় স্মৃতিসৌধে : ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ বিজয় দিবসে ঢাকা মহানগর ছাড়া সারাদেশে বিএনপির র‌্যালি ‘বন্দীদের তালিকা দিতে অস্বীকৃতি হামাসের’ ঢাকায় ৬ দিনব্যাপী নগর কৃষি মেলা শুরু জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সাবেক ফুটবলার মিখেইল কাভেলাশভিলি ১১ মাস ধরে সারকারখানায় উৎপাদন বন্ধ, গ্যাসের দাবিতে বিক্ষোভ

সকল