লিবিয়ায় জিম্মি নাটোরের ৪ যুবক উদ্ধার
- এস এম ইসহাক আলী রাজু গুরুদাসপুর (নাটোর)
- ১১ জুন ২০২৪, ০০:১৬
লিবিয়ায় জিম্মি থাকা নাটোরের গুরুদাসপুরের চার যুবককে উদ্ধার করেছে সেই দেশের সেনাবাহিনী। উদ্ধারের খবর শুনে চার যুবকের পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার। গত রোববার দুপুরে এই চার বাংলাদেশীকে উদ্ধার করে লিবিয়ার সেনাবাহিনী। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: উজ্জ্বল হোসেন জিম্মি প্রবাসীদের উদ্ধার ও অপহরণকারী চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। উদ্ধার হওয়া চার যুবক হলেন- উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মো: সোহান প্রাং, মো: সাগর হোসেন, মো: নাজিম আলী ও মো: বিদ্যুৎ হোসেন।
প্রবাসী সোহানের মা রুলি বেগম জানান, গত ২ জুন তার ছেলেসহ প্রতিবেশী আরো তিন প্রবাসী যুবককে লিবিয়ায় অপহরণ করা হয়। তারপর নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে চারজনের জন্য ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় অপহরণকারীরা। সন্তানদের এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনিসহ অন্যদের পরিবার। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লিবিয়া থেকে তার মোবাইলের ইমু নম্বরে তার ছেলে সোহান একটি ভিডিওবার্তা পাঠান। সেখানে সোহান বলে, ‘আব্বা আমাদেরকে লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। তোমরা চিন্তা করো না। আমরা এখন নিরাপদে আছি।’ এমন খুশির খবরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে উৎকণ্ঠায় প্রবাসীর পরিবার ও স্বজনরা। তিনি সরকার, গণমাধ্যম ও লিবিয়া প্রশাসনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
আরেক প্রবাসী বিদ্যুতের মা বিউটি বেগম জানান, ‘তার স্বামী অনেক আগে থেকেই লিবিয়ায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। পরবর্তীতে তার ছেলেসহ প্রতিবেশী আরো তিন যুবক এক সাথে লিবিয়ায় যান শ্রমিক হিসাবে। তার ছেলেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। অপহরণ হওয়ার পর থেকেই পরিবার ও স্বজনদের আহাজারি থামছিল না। রোববার তার স্বামী তাকে কল করে জানায় তার ছেলেসহ চারজনকেই লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার করেছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি জানান, লিবিয়ায় জিম্মি থাকা চার যুবকের উদ্ধারের ঘটনা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। সেই খবর ওই চারজনের পরিবারকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে তারা সেখানকার সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। চার যুবকই সুস্থ ও ভালো আছে। নাটোর পুলিশ সুপারের নির্দেশে শুরু থেকে পরিবারগুলোর সাথে থানা পুলিশ যোগাযোগ রেখেছে।
উল্লেখ্য, প্রায় দুই বছর পূর্বে গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের মো: শাজাহান প্রাং এর ছেলে মো: সোহান প্রাং (২০), মো: তয়জাল শেখের ছেলে মো: সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) ও ইনামুল ইসলামের ছেলে মো: বিদ্যুৎ হোসেন (২৬) লিবিয়াতে কাজের জন্য যান। সবার পরিবারই জমি বন্ধক, গরু বিক্রি ও ঋণ করে সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। দুই বছরে কাজ করে প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন। অভাবের সংসারে হতদরিদ্র পরিবারগুলো প্রবাসী সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল। প্রবাস থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন ভেবেই ঋণ করে ছেলেদের তারা বিদেশে পাঠিয়ে ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা