এলপিজির দাম কমলেও বাজারে প্রভাব নেই
বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৪ জুন ২০২৪, ০২:০৪
ভোক্তা পর্যায়ে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে আড়াই টাকা কমিয়ে ১১৩ টাকা ৫৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সুবাদে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৩৯৩ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৩৬৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নতুন দর কার্যকর হওয়ার কথা। গতকাল বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান মো: নূরুল আমিন। এ দিকে এলপি গ্যাসের দাম কমানো হলেও বাজারে তেমন একটা প্রভাব নেই। ভোক্তাদের বাড়তি দামই গুনতে হচ্ছে।
গতকাল রামপুরা বনশ্রীর বাসিন্দা মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল ২২ কেজি বেক্সিমকো এলপি গ্যাস কিনছেন ২ হাজার ৮০০ টাকা। অথচ ঘোষণা দাম অনুযায়ী দাম হওয়ার কথা ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর আগের দাম অনুযায়ী হওয়ার কথা ছিল ২ হাজার ৫৫৩ টাকা। কিন্তু প্রতি ২২ কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে আড়াই শ’ থেকে তিন শ’ টাকা। বাড়তি দাম সম্পর্কে বনশ্রীর এক খুচরা বিক্রেতা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, আমাদের বাড়তি দামেই কিনতে হয়। আর বেশি দামে কিনে কিভাবে কম দামে বিক্রি করবেন। এ কারণে গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি দামই আদায় করতে হয়। ওই বিক্রেতা মনে করেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি দাম কমাচ্ছে। কিন্তু ওই দাম বাজারে কার্যকর হচ্ছে কি না তা তদারকি করা হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, তদারকিটা হতে হবে কোম্পানি পর্যায় থেকে। কোম্পানি পর্যায় থেকে কমলে গ্রাহক পর্যায়েও এর সুফল মিলবে। অন্যথায় দাম কমিয়ে কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, যখন বিইআরসি দাম বাড়িয়ে দেয় তখন শুরু থেকেই কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যখন দাম কমানো হয় তখন কোম্পানি থেকে কার্যকর করতে গড়িমসি করা হয়। এ কারণে বাজার তদারকি জোরদার করলেই গ্রাহক পর্যায়ে মিলবে এর সুফল।
প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন সংযোগ বন্ধ থাকায় গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিইআরসি প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা দাম ১১৩ টাকা ৫৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে। সে অনুযায়ী সাড়ে পাঁচ কেজি, ১২, ১৫, ১৬, ১৮, ২০, ২৫, ৩০, ৩৫ ও ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডারগুলোর দাম কমেছে। যদিও বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে ভোক্তাকে কিনতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বাজার ঘুরে সে অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। এলপিজির পাশাপাশি গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও কমেছে। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ টাকা ৫৩ পয়সা। যা গত মাসে ছিল ৬৩ টাকা ৯২ পয়সা।
গত এপ্রিল মাসে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল এক হাজার ৪৪২ টাকা, মার্চ মাসে ছিল এক হাজার ৪৮২ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল এক হাজার ৪৭৪ টাকা, জানুয়ারিতে ছিল এক হাজার ৪৩৩ টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিল এক হাজার ৪০৪ টাকা, নভেম্বরে ছিল এক হাজার ৩৮১ টাকা, অক্টোবর মাসে ছিল এক হাজার ৩৬৩ টাকা, সেপ্টেম্বরে ছিল এক হাজার ২৮৪ টাকা, আগস্ট মাসে এক হাজার ১৪০ টাকা, জুলাই মাসে ছিল ৯৯৯ টাকা, জুনে ছিল এক হাজার ৭৪ টাকা, মে মাসে ছিল এক হাজার ২৩৫ টাকা ও এপ্রিলে ছিল এক হাজার ১৭৮ টাকা।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে মিল রাখতে সৌদির আরামকো কোম্পানির প্রপেন ও বিউটেনের দামের সাথে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এলপিজির মূল্য ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। তারপর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা