বিনিয়োগকারী বাড়াতে লভ্যাংশের দ্বৈত কর প্রত্যাহার চায় সিএসই
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
দেশের জনসংখ্যার তুলনায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুবই কম। যা গত কয়েক বছর ধরে নিম্নমুখী ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ। সিএসই বলছে, একটি টেকসই বাজার কাঠামোর জন্য অর্থ বাজার, পুঁজিবাজার এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কাঠামোর একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশের আর্থিক বাজার কাঠামো কার্যত অনেকাংশে ব্যাংক ব্যবস্থা তথা অর্থ বাজারের ওপর নির্ভরশীল। যার বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে।
সিএসইর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে গতকাল প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ নাকিব উদ্দিন খান, পরিচালক মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশের জন্য শুধুমাত্র একটি বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত দিকনির্দেশনাও বটে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি আগামী বছরের জাতীয় বাজেটে পুঁজিবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
প্রস্তাবনায় সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে ৩৪৯টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য গুণগত মানসম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা একটি সন্তোষজনক সংখ্যায় উন্নীতকরণ প্রয়োজন। তিনি বলেন, দেশে ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল শক্তিশালী বন্ড মার্কেট অতীব জরুরি। একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গঠন ও নতুন বন্ডের তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের বৈচিত্র্য আনয়নের নিমিত্তে বন্ড হতে উদ্ভূত আয়কে কর অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমাদের দেশের করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট। যথাপুযুক্ত প্রণোদনার মাধ্যমে একটি যথাপুযুক্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। বর্তমানে করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার দেশের জিডিপিরতুলনায় এক শতাংশের কম, যা একটি দুর্বল আর্থিক খাতের নির্দেশক।
সিএসই প্রস্তাবনায় বলছে, পুঁজিবাজারের জন্য বাজার মধ্যস্থতাকারী ও বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্কট রয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কম। এই সংখ্যা একটি কাক্সিক্ষত স্তরে উন্নীত করা প্রয়োজন। আসিফ ইব্রাহিম বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজার শুধুমাত্র ইকুইটিমার্কেট নির্ভর। যার ফলে বাজারে যেমন অনাকাক্সিক্ষত অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়, তেমনি এটি পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের অন্তরায়। এই লক্ষ্যে কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।
পুঁজিবাজারের জন্য বাজেট প্রস্তাবনায় সিএসই বলছে, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ বৃদ্ধিকরণ। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ২-৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান করা। কার্যকর বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত বন্ডের সুদকে বিনিয়োগকারী নির্বিশেষে কর অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাব করছি। পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে ব্লু বন্ড এবং গ্রিন বন্ডকে সম্পূর্ণ কর অব্যাহতিসহ কর রেয়াত প্রদান করা হলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাপক অংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব।
বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনায় সিএসই বলছে, লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনী লাভের ওপর কর প্রত্যাহার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইটিএফ ইত্যাদি কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে কর রেয়াতি সুবিধা বৃদ্ধিকরণ এবং মূলধনী লাভের ওপর কর কর্তন করা হলে তা চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনাকরণ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা