৩ বছরেও উদঘাটন হয়নি ডা: সাবিরা হত্যার রহস্য
২৯ দফা সময় বাড়িয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ মে ২০২৪, ০০:০৫
তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উদঘাটন হয়নি ডা: কাজী সাবিরা রহমান লিপি হত্যাকাণ্ডের রহস্য। জানা যায়নি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে কে বা কারা জড়িত। চাঞ্চল্যকর এই হত্যার রহস্য উদঘাটন কত সময় লাগতে পারে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগানে নিজ বাসা থেকে গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: কাজী সাবিরা রহমান লিপির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার দুই দিন পর সাবিরার ফুফাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। সর্বশেষ গত ১৬ মে মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদের আদালত আগামী ১ জুলাই দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ২৯ দফা প্রতিবেদন দাখিলের সময় পেয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা।
থানা পুলিশের হাত ঘুরে মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পিবিআই। তদন্ত সংস্থা বলতে পারছে না খুনের কারণ। তবে তারা আশা করছেন, শিগগিরই চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করবেন।
পিবিআই মামলার তদন্ত পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল ডা: সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত আছেন।
এ বিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা জানান, মামলাটির তদন্ত চলমান। আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারক করছেন। ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসকের স্বামীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল, অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কী কারণে ডা: সাবিরা খুন হয়েছেন, তার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। সাবিরার স্বামী বাদে এ মামলায় আপাতত কোনো সন্দেহভাজন আসামি নেই।
ডা: সাবিরার ফুফাতো ভাই মামলার বাদি রেজাউল হাসান মজুমদার জানান, তিন বছর হয়ে গেল, বিচার পেলাম না। কিছুই হলো না। তার স্বামীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে, তথ্যও পেয়েছে। দুটা ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে। পিবিআই আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন। তবে দুর্ভাগ্য যে তিনটি বছর চলে গেলেও আমরা এখনো কাক্সিক্ষত জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়নি। সাবিরার মা ও ছেলে বিচারের আশায় রয়েছেন। আমরা সবাই বিচারের অপেক্ষায় আছি। আমাদের একটাই চাওয়া মামলার তদন্ত শেষ করে মূল আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগান প্রথম লেনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের শোয়ার ঘর থেকে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান ওরফে লিপির রক্তাক্ত ও দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গলা কাটা, পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পোড়া ছিল লাশটি। পরের বছর ১৯ এপ্রিল ডা: সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরদিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২৪ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
নিহতের পারিবারিক ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সামছুদ্দিন আজাদ দুটি বিয়ের মধ্যে একটির কথা গোপন করে ডা: সাবিরাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বামী বিদেশে থাকেন জানিয়ে সাবিরা কলাবাগানে বাসাভাড়া নেন। তাদের মধ্যে বিরোধ থাকার পরও সামছুদ্দিন আজাদ সাবিরার বাসায় যাতায়াত করতেন। সাবিরা খুনের পর বাসা থেকে তালাকনামাসহ বেশ কিছু ডকুমেন্ট পাওয়া যায়, যাতে ভিকটিমের প্রতি আসামির চরম ক্ষোভ থাকার বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া সাবিরা খুন হওয়ার আগে তাদের দীর্ঘ সময় ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়। সেখানে তাদের মধ্যে বাগি¦তণ্ডা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা