১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি : ১২ দলীয় জোট

-

১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, আধিপত্যবাদ, আগ্রাসন, গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ সামাজিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ ৭১ সালে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল, রাওয়ালপিন্ডি থেকে মুক্ত হয়েছিল, দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২০০ ওয়াগন ভর্তি করে ২৭০০ কোটি টাকার যুদ্ধাস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় ভারত। ১০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যশস্য ধান, চাল, গম লুট করে, ৮ বিলিয়ন ডলারের ত্রাণসামগ্রী পাচার করে, ১.৫ ব্রিলিয়ান ডলারের পাট চুরি করে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের শিল্প কারখানা থেকে যন্ত্রাংশ চুরি করে আগরতলায় পাঁচটি নতুন শিল্প-কারখানা তৈরি করে ভারত। ভারতে বাংলাদেশী জাল টাকা ছেপে দেশের বাজার সয়লাব করে দেয়। এভাবে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের শুরু থেকেই শোষণ করে আসছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুর জেলার গাছা থানার আশরাফ মার্কেট এলাকায় ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণকালে নেতারা এ কথা বলেন।
নেতারা আরো বলেন, আমরা বিশ্ব সংবাদ মাধ্যম ও দেশের সংবাদ মাধ্যমে দেখছি ভারতের ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে বিষক্রিয়া পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেগুলো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। সর্বশেষ যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাও ভারতের পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের দুটি ওষুধে ক্যান্সারের মিশ্র উপাদান পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর, হংকং সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।

বিগত ১৬ বছরে সীমান্তে ১২০০ এর অধিক নিরীহ বাংলাদেশী নাগরিককে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফেলানীর লাশ যখন সীমান্তে ঝুলে থাকে তখন মনে হয় সমগ্র বাংলাদেশ আজকে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে আছে। নেতারা বলেন, যদি বন্ধু হও, যদি আমাদের প্রতিবেশী হও, তাহলে সীমান্তে অহরহ গুলি কেন? তাই আজকে বাংলার জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা আরো বলেন, আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধ হতে পারে? কোনো দিনও বন্ধু হতে পারে না। তাই আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করো, আগ্রাসন নীতি পরিহার করো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করো। কারণ আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনো দিন গ্রহণ করবে না।
নেতারা বলেন, আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব। এই সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। নেতারা আরো বলেন, গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ভারতীয় পণ্যের বিষক্রিয়ার কথা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে এই লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, প্রেসিডিয়াম মেম্বার নবাব আলী আব্বাস খান, জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ মহাসচিব আবু হানিফ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব আবুল বাশার, যুগ্মমহাসচিব চাষী এনামুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র সহ-সভাপতি শওকত আমিন, লেবার পার্টির যুগ্মমহাসচিব শরিফুল ইসলাম, সহ জোটের শীর্ষ নেতারা।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement