ঈদের আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

টাকার সাথে ডলারের দাম বাড়লেও কোরবানির ঈদের আগে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, আমদানিনির্ভর পণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেলের কোনো সমন্বয় করব না। আশা করছি উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক যারা আছেন, ঈদ পর্যন্ত নতুন করে কোনো মূল্য বেঁধে দেবে না। আগের দামেই তারা সরবরাহ করতে পারবেন।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
ডলারের দাম বাড়ায় আমদানিনির্ভর পণ্যের দামও বাড়বে, এতে ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়বে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, ডলারের সমন্বয়টা হলো ১০ টাকা থেকে ১৭ টাকা। এতে ভোক্তাপর্যায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। ডলারের দাম বাড়লেও ভোক্তাদের সুবিধার্থে পণ্যের দাম একই পর্যায়ে রাখব।’
কেন পড়বে না- সে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারণ আমদানিকারকরা তখনই অভিযোগ করছিলেন যে ব্যাংক থেকে তারা সরকারি নির্দিষ্ট রেটে ডলার পাচ্ছিলেন না, তারা তখনই ১২০ টাকা, ১২২ টাকা, একেকজন একেকভাবে প্রাইভেটলি সেটলড (নিষ্পত্তি) করছিলেন।
তিনি বলেন, এখন সরকার সমন্বয় করার কারণে সরকারি রেটেই তারা আমদানি করতে পারবেন। কাজেই আমদানিনির্ভর পণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেলের দামে কোনো সমন্বয় করব না। আগে যে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল, ঈদের আগ পর্যন্ত নতুন কোনো দাম নির্ধারণ করা হবে না। পুরনো দামেই তারা সরবরাহ করতে পারবেন।
তাহলে ঈদের পর ক্রেতাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে? সাংবাদিকরা এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা একটা আন্তর্জাতিক পণ্য। কোথায় যুদ্ধ হবে, অর্থনীতির কোথায় কী হবে, সেটা নিয়ে আগাম ধারণা করা যাবে না। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে মূল্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করব।
বাজার মনিটরিংয়ে কি কোনো অবহেলা হয়েছে, যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছেন- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রমজানের আগে-পরে আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে তৎপর ছিলাম। নতুন সরকার আসার পরে সময়টা কম ছিল, জোরটা অনেক বেশি ছিল, বাজারে যাতে কোনোভাবে খাদ্য কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সঙ্কট না হয়।
তিনি আরো বলেন, মনিটরিং আবার সচল করব, যেন ঈদ সামনে রেখে বাজার থেকে কেউ সুযোগ-সুবিধা নিতে না পারেন। এটা নিয়মিত মনিটরিং। একটা স্বাভাবিক গতিতে কার্যক্রম চলে, আরেকটি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রমজানে, ঈদে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। তাহলে আমাদের কার্যক্রম জোরদার হবে, দৃশ্যমান হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো উৎপাদন কিংবা সরবরাহ করি না। আমরা মোটামুটি কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে তাদের কাছ থেকে সরবরাহ পেয়ে ভোক্তাদের কাছে নিশ্চিত করি। তাদের নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আজ যেহেতু খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ছিলেন না, তাই ঈদের আগে আরেকবার বসব। সেখানে খাদ্য ও কৃষিপণ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেবো।