চার মামলায় আসামি আড়াই হাজার
মিরপুরে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ মে ২০২৪, ০০:৫৯
রাজধানীর মিরপুরে রোববার দিনভর অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় ২৫০০ জনকে।
রোববার বিক্ষোভকারী অটোরিকশা চালকরা কালশী মোড়ে একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেন এবং ভাঙচুর করেন অন্তত ১০টি যানবাহন। এসব অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তিন থানায় চারটি পৃথক মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদি হয়ে পল্লবী থানায় দুটি, কাফরুল থানায় একটি ও মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো: জসীম উদ্দীন মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, রোববার দিবাগত রাতে মিরপুরের পল্লবী থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়। একটি মামলা পল্লবী থানা পুলিশ ও আরেকটি পল্লবী ট্রাফিক জোন থেকে দায়ের করা হয়েছে।
অপর দিকে কাফরুল থানা ও মিরপুর মডেল থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার দিনভর আন্দোলন-অবরোধের নামে পুলিশের কাজে বাধা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এসব মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
মামলায় আসামি করা হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি অটোরিকশা চালককে। এসব মামলায় চার থানায় পৃথক অভিযানে ৩৭ জন অটোরিকশা চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিসি জসীম উদ্দীন বলেন, রোববার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় তাণ্ডব চালায় অটোরিকশা চালকরা। তারা রাস্তাসহ কালশী ফ্লাইওভার অবরোধ করে রাখে। এক পর্যায়ে বিকালের দিকে কালশীর রাস্তা অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা একাধিক বাসে ভাঙচুর করে। এ ছাড়া সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। যে বা যারা পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
পল্লবী থানায় দায়ের করা দুটি মামলার বাদি এসআই মোহাম্মদ আলী। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনিভাবে জনতা দাঙ্গা সৃষ্টি, সরকারি কর্তব্য ও কাজে বাধাদানসহ পুলিশের ওপর আক্রমণ ও অপরাধমূলক বল প্রয়োগে সাধারণ ও গুরুতর জখম, ভাঙচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধন, বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটানো এবং বিস্ফোরক দ্রব্য হেফাজতে রাখা ও সহায়তা করার অপরাধে মামলা দায়ের করা হলো। মামলায় ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
মামলায় উল্লিখিত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে।
অপর দিকে একই থানায় ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিমের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদি সার্জেন্ট মিন্টু চন্দ্র দে। এ মামলার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, এ থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ১৫ জন অটোরিকশা চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম জানান, কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় ৬০০ থেকে ৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়ে ১২ জনকে।
৪২ জন কারাগারে
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- অনিক, আবু বক্কর, আলী হোসেন, সাগর মৃধা, সাগর শেখ, বকুল হোসেন, নুরুল ইসলাম, মাজেদ আলী, মোতাহার হোসেন, দুলু মিয়া ওরফে বুলু, নবী হোসেন, শাহাবুদ্দিন, নুরুল আমন, জুনায়েদ, জাকির হোসেন, ফকরুল ইসলাম, কামাল মিয়া, আল আমিন মিয়া, সুপ্ত রায়, ওসমান গণি, শাকিল হোসেন, আব্দুল হামিদ, আজিজুল হক, আমির, শহিদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, রাসেল, রানা চৌধুরী, রাসেল, জাকির হোসেন, মেহেদী হাসান, আবদুল মোতালেব, মোরসালিন মিয়া, শাহজাহান মিয়া, রাসেল, ওয়াজিব, আনোয়ার হোসেন, আতাউর রহমান, সুমন, নুর মোহাম্মদ ও শরীফ। তাদের সবাইকে আদালতের আদেশে কারাগারে নেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে প্রথম ১৫ জন মিরপুর মডেল থানার মামলার আসামি। পরবর্তী ১২ জন কাফরুল থানার মামলার আসামি। শেষের ১৫ জন পল্লবী থানার মামলার আসামি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা