যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু বলার নেই : ওবায়দুল কাদের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ মে ২০২৪, ০০:০৫
মানবাধিকারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশে যে দৃষ্টিতে দেখে, সে দৃষ্টিতেই নিজ দেশে তাকাতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সঙ্ঘাতে লিপ্ত হয়েছে এমন কিছু আমাদের জানা নেই। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সঙ্ঘাত করব কেন? আমরা সত্য বলতে গিয়ে যদি সেটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগে সেখানে আমাদের বলার কিছু নেই।
গতকাল রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে একটা সিনারিও ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে ১৯৬৮ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি এপিক সেন্টার ছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটিগুলোতে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ হয়েছে। আজকে ৬৮ সালের পুনরাবৃত্তি এখনো এপিক সেন্টার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে সত্যটা যদি বলি তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বের বিষয়টি কেন আসবে? তুমি আমার মানবাধিকার, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করবে। আর এখন তোমার মানবাধিকার নিয়ে বলতে পারব না? তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত গান ভায়োলেন্স, ম্যাস শুটিং হয়। ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় গণহত্যা নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। তা দমন করা হচ্ছে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে। ২৫০০ গ্রেফতার হয়েছে। আর আমাদের দেশে বিরোধী দল যখন অগ্নি সন্ত্রাস করে, পুলিশের ওপর হামলা করে, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নি সংযোগ করে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর চালায়, সাংবাদিকের ওপর আক্রমণ করে তখন যুক্তরাষ্ট্র কথা বলে না, চুপ থাকে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের মানবাধিকার যে দৃষ্টিতে দেখবে তাদের দেশে সেভাবে দেখবে না কেন?
সরকারের ওপর দেশী-বিদেশী চাপ আছে কি না, চাপ থাকলে কারা দিচ্ছে এবং এ নিয়ে সরকার অস্বস্তিতে আছে কি না- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, চাপটা আছে, তবে সেটা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ। যুদ্ধের কারণে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট, এই সঙ্কট বিশ্বজুড়ে। এর প্রভাব প্রতিক্রিয়া আমাদের এখানেও আসে। আমদানি রফতানি, জ্বালানি, মুদ্রাস্ফিতি, ডলার সঙ্কট- এসব বিষয়গুলো অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য বিষয়। এগুলো এফেক্টেড হলে চাপ পড়ে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে চাপ আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করছে আওয়ামী লীগ। তবে অন্য দলগুলো চাইলে নিজেদের দলীয় প্রতীকেও নির্বাচন করতে পারে। মির্জা আব্বাসরা দলীয় প্রতীকে কেন নির্বাচনে এলেন না? আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা নতুন কৌশলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রতীক ছাড়া করতে চেয়েছি। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত, এখানে আইনি কোনো বিষয় নেই।
এ সময় ওয়ান ইলেভেনে আটক প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা আজমসহ আমরা জেলে একসাথে ছিলাম। সে সময়ের বাস্তবতা, ফোকাস তখন যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল ওয়ান ইলেভেনের অস্বাভাবিক সরকার তাদের লক্ষ্য ছিল একটা বিরাজনীতিকরণ। এর সাথে চোর হয়ে যাওয়ার সম্পর্ক আছে এটা মনে করি না। রাজনীতিবিদদের ধরা হয়েছে বিরাজনীতিকরণের জন্য। মাইনাস টু ফর্মুলাও হয়েছিল রাজনীতিবীদদের টার্গেট করার জন্য।