দুর্যোগ-দুর্ভোগ মানেই আওয়ামী লীগ : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:২০
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুর্যোগ ও দুর্ভোগ মানেই আওয়ামী লীগ। দেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ, এ জন্য কি সরকার দায়ী নয়? আজকে গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় সমস্ত কিছু ভরাট করা হচ্ছে। কার স্বার্থে ভরাট হচ্ছে? আওয়ামী ভূমিদস্যুদের স্বার্থে। যুবলীগ-ছাত্রলীগকে নতুনভাবে ভূমিদস্যু বানিয়ে জনগণের দম বন্ধ করা হচ্ছে। কারণ তারা তো এ দেশে থাকবে না। তারা যাবে মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও দুবাই। সুতরাং ওদের তো দায় নেই।
গতকাল সোমবার বিকেলে এক মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মিথ্যা মামলায় জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের প্রতিবাদে যুবদলের উদ্যোগে তাৎক্ষণিক এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার নেতৃত্বে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মরণখেলায় খেলছেন। তিনি আগুন নিয়ে খেলছেন। কেননা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে শিশু মারা গেছে। মহিলাসহ প্রায় ২০ জন মানুষ মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কি দায় নেই? আপনি কয়লা পুড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সুন্দরবন উজাড় করার ষড়যন্ত্র করছেন। দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্র উপকূলের সব বন উজাড় করে দিচ্ছেন। সেখানে ফল হয় না, এটা তো আপনার কারণে। যেখানেই দুর্নীতি ও লুটপাট সেখানেই আওয়ামী সরকার। আজকে ব্যাংক, বীমা সর্বত্র হরিলুট চলছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। তারা নাকি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে থুথু দিয়ে ইটের দালান গড়া যায় না। যেটা শেখ হাসিনা করেছেন গত কয়েক বছর ধরে। আজকে দেশে কর্মসংস্থান নেই। চার দিকে শুধু হাহাকার আর আহাজারি। সেই পরিস্থিতিতে আল্লাহর অভিশাপ। এই ভয়ঙ্কর অগ্নিবর্ণরূপ বাংলাদেশের প্রকৃতি। এর মধ্যেও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে শেখ হাসিনার নীল নকশা থামছে না। সে জন্যই যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে কারাগারে পাঠানো হলো। এর আগে অনেক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে শেখ হাসিনার আদালত।
রিজভী বলেন, আজকে আমরা একটি মিছিল নিয়ে গেলে বামে-ডানে পুলিশ বাধা দেয়। কারণ আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। আজকে প্রতিবাদও করা যাবে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও নেই। কই ব্যাংক লুটেরা ও ভূমি দস্যুদেরকে তো বাধা দেয়া হয় না। এই দায়িত্বও তো আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর। অথচ আপনারা গণতন্ত্রকামী মানুষকে বাধা দেন! তাদের মিছিল দেখলে ও স্লোগান শুনলে আপনারা বাধা দেন। আমি অবিলম্বে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় প্রতিটি আঘাত আপনাদের দিকে ফিরে যাবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। অন্যায়-অবিচার না থামালে আপনাদের দিকেই ফিরে যাবে।
আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, পুলিশ ও আজ্ঞাবহ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া থেকে যুবদল নেতৃবৃন্দকে বিরত রাখা যাবে না; বরং এতে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আকাক্সক্ষা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই মুক্ত করে আনা হবে। এই অবৈধ সরকারের কছে মুক্তির দাবি জানানো হবে না।
যুবদলের সহসভাপতি জাহিদুর রহমান দীপু সরকার, কামরুজ্জামান দুলাল (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, কামাল আনোয়ার আহমেদ, আব্দুল জব্বার খান, বিল্লাল হোসেন তারেক, আজিজুর রহমান আজিজ, সহ-সাধারণ সম্পাদক, মাসুদ আহমেদ খান, আতিক আল হাসান মিন্টু, প্রচার সম্পাদক আব্দুল করিম সরকার , সাহিত্য প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত। তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হক হিমেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, যুবদলের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ২৩ নম্বর ওয়ার্ড-এর উদ্যোগে খিলগাঁও তালতলায় প্রচণ্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইন ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার লোকদেরকে সুখে-শান্তিতে রাখতে গোটা দেশের মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক এবং রামপুরা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নীলুফার ইয়াসমীন নীলু।
তিনি বলেন, মানুষ একটা নিশ্চিত নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে চায়। বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে চায়; কিন্তু আপনি তো প্রধানমন্ত্রী সেটি দেননি। আপনি জনগণের অক্সিজেন কেড়ে নিয়েছেন। আপনি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস কেড়ে নিয়েছেন। আপনি তথাকথিত উন্ননের নামে দেশকে একটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত করেছেন। ‘আজ দেশে বৃক্ষ নেই, নদী ভরাট, খালভরাট সব দখল করেছেন। তাহলে বৃষ্টি হবে কেন, তাহলে গাছের পাতা থাকবে কেন, গাছে ফল থাকবে কেন?’
রিজভী বলেন, সমস্ত বিশেষজ্ঞ বলেছেন ‘কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা যাবে না’। আপনি প্রধানমন্ত্রী কারো কথা শোনেননি। কারণ আপনার লোকদের টাকা চাই। আপনার লোকদের পকেট ভরা চাই। আপনি আপনার লোকদেরকে সুখে-শান্তিতে রাখতে গোটা দেশের মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে কবরস্থানের দিকে ঠেলে দিয়ে, কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন। তার পরিণতি কী? আজ ২৮ দিন যাবৎ দেশের মানুষ তাপদাহে পুড়ছে, স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকসহ ১৭ জন মারা গেছেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: মো: রফিকুল ইসলাম, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সহসভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী, মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, ভিপি এ জি এম শামসু, হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ, দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ বি এম এ আব্দুর রাজ্জাক, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা ফয়েজ আহমেদ ফেরু, আলহাজ হেলাল কবির হেলু, নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক তাজ, ছাত্রদল নেতা মিরাজ, ডা: মুশফিক, আশরাফুল আসাদ, যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা