১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর মূল কাজ শেষ ট্রেন চলবে ডিসেম্বরে

-

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর উপর দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মাণের ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রেল সেতুর সর্বশেষ ৪৯তম স্প্যানটি বসানোর মধ্যে দিয়ে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়। ফলে পুরো রেল সেতু এখন দৃশ্যমান। বাকি কাজ শেষ হলেই চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু দিয়ে বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে সেতু পারাপার হবে।
গত ১৯ এপ্রিল সেতুর পশ্চিম অংশের ৫ থেকে ৬ নম্বর পিলারে ৪৯তম স্প্যান বসানো হয়। এতে দেশের সবচেয়ে বড় ৪.৮ কিলোমিটারের দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুটি পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে। সেতুটিতে দেশী-বিদেশী ৫ সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রকৌশলীরা দিন-রাত সুদক্ষভাবে সেতুটির বাস্তবায়নের কাজ করছে।
টাঙ্গাইল অংশের ভূঞাপুর উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের অংশের যমুনা নদীর উপর এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে পৃৃৃৃথক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। সেতুর দুই পাশে রেললাইনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। রেল সেতুটি ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর গন্তব্যে পৌঁছার সময় কমে যাবে। পাশাপাশি পার্শবর্তী দেশগুলো থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ রুটে সহজে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনসহ সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথ নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এ সেতু।

জানা গেছে, উত্তরের সমৃদ্ধির সোপানে ১৯৯৮ সালের ২৩ জুনে বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেল যোগাযোগ শুরু হয় । বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে প্রতিদিন ৩৯টি ট্রেন পারাপার হয়। এতে সময় অপচয়ের পাশাপাশি শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। তবে নতুন রেল সেতুর কাজ শেষ হওয়ার পর ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে। মূল রেল সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে জাপানী কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানি। প্রতিষ্ঠান দুটি পৃথকভাবে সেতুর পূর্ব ও পশ্চিমে ভাগ করে কাজ করছে।
রেলওয়ে প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয়ও বৃদ্ধি করা হয়। পরে ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। বর্তমানে রেল সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুটি দিয়ে মিটার গ্রেজ ও ব্রডগ্রেজ ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো: মাসউদুর রহমান বলেন, মূল সেতুর অবকাঠামোর কাজ শেষ, ফলে দৃশ্যমান হয়েছে রেলসেতুটি। অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ করে টেস্টিং, কমিশনিং করে ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement