প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলির নিন্দা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪
ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই মুসলিম শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে পুলিশের গুলিতে বহু লোক আহত হওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
জামায়াত : ফরিদপুরের মধুখালীতে সমাবেশে পুলিশের গুলি বর্ষণে বহু লোক আহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো তদন্ত-প্রমাণ ছাড়াই দুই সহোদর মুসলিম ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে পুলিশ এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর গুলি বর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে অনেক লোক আহত হন। পুলিশের এই হামলা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, অমানবিক ও বর্বরোচিত। আমরা সমাবেশের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ১৮ এপ্রিল যারা নিহত হয়েছেন আমি তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং নিহত ও আহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মধুখালীতে সংঘটিত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করার এবং নিহত ও আহতদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান এ জামায়াত নেতা।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : সংগঠনের আমির আল্লামা ছরওয়ার কামাল আজিজি ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ফরিদপুরে দুই মুসলিম সহোদরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হিন্দুত্ববাদের আস্ফালন শেষ হতে না হতেই গতকাল মধুখালীতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে গুলি করে দু’জন মুসলিমকে হত্যার কথাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া সত্তর-আশি জনকে আহত করেছে পুলিশ। এমনটা সত্যি হলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে যা কম্য নয়। এ দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপরে এই ধরনের হামলা স্পর্ধার শামিল। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, আমরা প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বিরানব্বই ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর এই ভূখণ্ডে এসব কী হচ্ছে? যখন যেভাবে খুশি মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, গুলি করে পিটিয়ে মেরে ফেলছে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার সরাসরি হিন্দুত্ববাদের পক্ষে নগ্ন হয়ে নেমেছে। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এই দেশে রাম রাজত্ব কায়েম করতে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হচ্ছে। নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের গভীর চক্রান্ত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হচ্ছে। ইসলামবিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদির কূটচাল ও ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছে সরকার। এ দেশের মানুষ এসব বরদাশত করবে না। হিন্দুত্ববাদের নারকীয় তাণ্ডবের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই সারা দেশের জনগণ ফুঁসে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশকে ভয়াবহ বিপদ থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানান তারা। নইলে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য সরকারই দায়ী থাকবে এবং এর কড়া মাসুল দিতে হবে বলেও নেতৃদ্বয় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।