বিপণিবিতানের চেয়ে ফুটপাথে ক্রেতা বেশি
- আবুল কালাম
- ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
রাজধানীতে ঈদ উপলক্ষে বিপণিবিতানের চেয়ে ফুটপাথে ক্রেতা বেশি। রাজধানীর ফুটপাথগুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্রেতা শপিংমল কিংবা বিপণিবিতানে ভিড় করছেন, তার প্রায় ৬০ শতাংশ ক্রেতা ফুটপাথে কেনাকাটা করছেন। বিপণিবিতানের বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন তাদের কাছে যে পরিমাণ ক্রেতা আসছেন তাদের বেশির ভাগই উচ্চবিত্ত। যার সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ। আর বাকি ৬০ শতাংশ ক্রেতা মধ্য ও নিম্নœবিত্ত যারা শপিংমলে না এসে ফুটপাথে শপিং করছেন।
ফুটপাথে যারা ব্যবসা করছেন তাদের অনেকে জানান, ফুটপাথে সাধারণত নিম্নবিত্তরা আসেন। কিন্তু এবার নিম্নবিত্তের বাইরে বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত। তাদের ভাষ্য, মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই যেসব মানুষ ফুটপাথে আসার কথা না তারাও এবার এখানে এসেছেন।
মানুষের কেনার ইচ্ছে আছে, কিন্তু সামর্থ্যে সংকুলান হচ্ছে না জানিয়ে একজন ক্রেতা বলেন, এখন খেয়ে বাঁচাটাই বেশি প্রয়োজন। তাই বাজেট সঙ্কুলানে মার্কেটে না গিয়ে ফুটপাথে শপিং করতে এসছেন।
তবে প্রত্যাশার চেয়ে বিক্রি কম জানিয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ঈদুল ফিতরে পোশাকের চাহিদা থাকে বেশি। বিশেষ করে ২০ রমজানের পর থেকে জমজমাট থাকে রাজধানীর সব মার্কেটের বেচাকেনা। তবে এ বছর রমজানের শুরু থেকেই বিক্রিতে ভাটা। এখন ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও বেচাবিক্রিতে সন্তুষ্ট নন বিক্রেতারা। তারা বলেন, ঈদের শেষ মুহূর্তের রমজানের শেষ শুক্র ও শনিবার সবচেয়ে বেশি বিক্রির প্রত্যাশা ছিল। তবে বিক্রি ভালো হলেও তা প্রত্যাশার চেয়ে কম।
বিক্রেতাদের ভাষ্য ঈদ ঘিরে মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়লেও বেচাবিক্রি অন্য বছরের তুলনায় কম। কিছু বেচাকেনা হচ্ছে, তবে কম দামের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। যে কারণে বেচাকেনায় লাভ হচ্ছে কম। আর বেশির ভাগ মানুষ শপিংমলে না এসে ফুটপাথে শপিং করছেন। ফলে এমনিতেই মার্কেটে লোক কমে গেছে।
শাড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর তারা যে দামি শাড়ি বিক্রি করতেন এবার তার ক্রেতা নেই। এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে কম দামের শাড়ি। ক্রেতা এসেই কম বাজেটের শাড়ি খুঁজছে। তাদের ধারণা মানুষের হাতে টাকা-পয়সা কম। তা ছাড়া নিত্যপণ্যেরও দামে আগুন। এসব কারণে ঈদের কেনাকাটায় বাড়তি বাজেট গুনতে হচ্ছে সবাইকে।
অন্য দিকে পাঞ্জাবি বিক্রেতারাও একই অভিযোগ করেন। তারা বলেন, মানুষ আগের মতো আর দামি পাঞ্জাবি কিনছে না। যারাই আসে তারা কম বাজেটের পাঞ্জাবি খুঁজে। বিক্রি কম জানিয়ে বিক্রেতারা বলেন, শুক্রবার ও শনিবার এ দুই দিন একটু বেশি ক্রেতা ছিল। তাও আগের বছরের চেয়ে কম। আর এখন আস্তে আস্তে ক্রেতা কমে যাচ্ছে। তবে যেসব মার্কেটে কম দামে পোশাক পাওয়া যায় সেগুলোতে ক্রেতা বেশি বলে জানান তারা।
অন্য দিকে মৌচাক ও আনারকলি মার্কেটের মাঝের জায়গায় ফুটপাথে থ্রি-পিস, প্লাজো, লেহেঙ্গা পাওয়া যাচ্ছে। এসব মার্কেটের গলির দোকানগুলোতে আছে শিশুদের পোশাকও। মিলছে জুতা। শেষ সময় এখন জুতার দোকানে ভালো ভিড়। বিক্রি বেড়েছে কসমেটিকস ও অন্য প্রসাধনীর দোকানেও।