১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সাভারে তেলবাহী লরি উল্টে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৪

-


সাভারের হেমায়েতপুরের জোরপুর এলাকার তানিন ফার্নিচারের কাছে তেলবাহী লরি উল্টে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ আরো দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো-ট্রাকচালক হেলাল (৩০) ও হেলপার মো: সাকিব (২৪)। দুইজনের শরীর শতভাগ দগ্ধ ছিল। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হলো। গতকাল বুধবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় ট্রাকের চালক হেলাল আর রাত ১টা ২০ মিনিটে ট্রাকের হেলপার সাকিব মারা যান। নিহত সাকিব বরগুনা সদর উপজেলার মো: আবেদ আলীর ছেলে। তিনি বরগুনা থেকে তরমুজ নিয়ে গাজীপুরের দিকে যাচ্ছিলেন।

সাকিবের ভাই নাইম বলেন, আমার বাবা খাগড়াছড়িতে অটোরিকশা চালান। আর আমি নিজেই পাইলিংয়ের কাজ করি। অভাবের সংসার হওয়ায় গত চার মাস ধরে ট্রাকের হেলপার হিসাবে কাজ নেয় সাকিব। ট্রাকের চালক হেলাল হাওলাদারের ট্রাকে বরগুনা থেকে তরমুজ লোড দিয়ে গাজীপুর যাচ্ছিলেন। পরে আমি জানতে পারি সাভারের দুর্ঘটনায় সাকিব দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ভাইয়ের সারা শরীর পুড়ে গেছে। পরে গত রাতে তার মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে দগ্ধ অবস্থায় যাদের বার্ন ইউনিটে আনা হয়। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম হাসপাতালে আসার আগেই মারা যান। বাকি সাতজনের মধ্যে হেলাল ও সাকিবের শরীরের ১০০ শতাংশ পুড়ে যায়। এই দুই জনের মধ্যে হেলাল হাওলাদার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান। আর সাকিব রাত ১টা ২০ মিনিটে মারা যান। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন তাদের মধ্যে মিলন মোল্লার শরীরের ৪৫ শতাংশ, শিশু মীমের শরীরের ২০ শতাংশ, আল আমিনের ১০ শতাংশ , নিরঞ্জনের ৮ শতাংশ, আব্দুস সালামের ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

সড়ক ও জনপথের (সওজ) বিরুদ্ধে অভিযোগ
তেলবাহী লরি উল্টে আগুন লেগে হতাহতের ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যেখানে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে ইউটার্ন বানাতে রাস্তার ওপর সিমেন্ট ও বালুর তৈরি ব্লক রাখা ছিল। তবে কোনো সতর্কতামূলক নির্দেশনা ছিল না। তা থাকলে হয়তোবা চলাচলরত গাড়িগুলো সতর্ক থাকতো। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্তৃপক্ষের মুঠোফোনে জানার জন্য চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি।

তানিন ফার্নিচারের বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিসের অভিযোগ
সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো: নুরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই দেশের প্রতিষ্ঠিত বড় একটি ফার্নিচারের ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেখানে আমরা পানি পাইনি। আমরা যখন আগুন নিভানোর চেষ্টা করতে ছিলাম তখন পানির অভাবে কাজ করতে আমাদের অনেক সমস্য হয়েছে। আমরা চাহিদা অনুযায়ী পানি ফেলে কাজ করতে আরো সহজ হতো।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোরে সাভারের হেমায়েতপুরের জোরপুল এলাকার তানিন ফার্নিচার সংলগ্ন স্থানে তেলবাহী লরি উল্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লরির পিছনে থাকা একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রাক, তরমুজবোঝাই একটি ট্রাক,একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যান একটি প্রাইভেটকার পুড়ে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement