১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আমি শেখ হাসিনার লোক দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবো না : বিএসএমএমইউর নতুন ভিসি

-


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ডা: দীন মোহাম্মদ নুরুল হক দায়িত্ব গ্রহণের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি আপনাদের লোক, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লোক, আমি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবো না।’ এ সময় তিনি বলেন, আমি দেশের প্রথম মেডিক্যাল এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি বিশ্বমানের আধুনিকতম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চাই। তার ভাষায়, তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল মেডিক্যাল হাসপাতালের মানে উন্নীত করতে চান। বিশেষ করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে আমার ভুল হতে পারে, এমন হলে আপনারা আমাকে শুধরে দেবেন। আমার দায়িত্ব পালনকালে আমি অন্যায়কে প্রশয় দেবো না, কোনো অন্যায় আবদার শুনবও না। আপনাদের সাথে নিয়ে আমি এখানকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে চাই। আপনাদের যে দায়িত্ব দেবো তা শতভাগ পালন করতে পারলেই আমি খুশি হবো।
নতুন ভিসি অধ্যাপক দীন মো: নুরুল হক গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণীর নারী-পুরুষ কর্মকর্তা-কর্মচারী মূল গেটের সামনে আনন্দে নাচতে থাকেন। তারা ঢাক ও ঢোলের বাজনার তালে তালে নাচতে থাকেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদধারী চিকিৎসকেরা ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।

নতুন ভিসি অধ্যাপক নুরুল হক দুপুর ১২টার কিছু পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এর আগেই নতুন ভিসির স্ত্রী, দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা ডা: মিল্টন হলে সাংবাদিকদের পাশে বসেন। নতুন ভিসির কথায়, ‘তারা এসেছেন তার দায়িত্ব গ্রহণের মুহূর্তটি উপভোগ করতে।’
নবনিযুক্ত ভিসি দীন মোহাম্মদ নুরুল হক গতকাল ভিসি কার্যালয়ের নিচে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে প্রথমেই ফুল দিয়ে দোতলায় ভিসির কার্যালয়ে যান। সেখানে সদ্য বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ ফুল দিয়ে নতুন ভিসিকে অভিনন্দন জানান এবং ভিসির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। তবে অধ্যাপক মো: শারফুদ্দিনই প্রথম ভিসি যার বিদায়ের আগের দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নানা ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে শোডাউন করে এবং ভিসির নানা ধরনের অন্যায় ও দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে বলতে থাকেন। এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারিতে তার মেয়াদ শেষ হয়। এসবের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণীর প্রভাবশালী চিকিৎসক ও শিক্ষকের ইন্ধন ছিল বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারী পুরনো ভিসির বিদায়টিকে অত্যন্ত লজ্জাজনক বিদায় বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে কোনো ভিসির বিদায়ের আগে এমন ঘটনা ঘটেনি।

দীন মোহাম্মদ বলেন, আমার কাছে সবাই সমান। আমি কারো অন্যায় আবদার শুনব না। আমার অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। আমি মনে করি, আপনারা সবাই খুবই ক্যাপাবল (সক্ষম)। বছরের পর বছর এখানে শ্রম দিয়ে আসছেন। সবাইকে জড়িয়ে ধরে একসাথে কাজ করতে চাই। আমি প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে আসিনি, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব। চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হবো। অন্য কিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন। তিনি আরো বলেন, আমার রুমে এসে অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করা আমি পছন্দ করব না। কাজের মাধ্যমেই আপনাদের সাথে আমার কথা হবে। অনুরোধ করব, আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন। আমি আপনাদের মতোই একজন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক রিজভি আহমেদ, প্রক্টর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসিদের কেউ ছিলেন না।


আরো সংবাদ



premium cement