জাপানি ২ শিশুকে ভাগাভাগি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:৪২
ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনা করে জাপানি মা ডা: নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফের দুই মেয়েকে ভাগাভাগি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই মেয়ের হেফাজত নিয়ে বাবার করা রিভিশনের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন অভিমত দিয়েছেন।
সোমবার ৩১ পৃষ্ঠার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে জাপানি মা ডা: নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফের দুই সন্তানকে ভাগাভাগি করে দেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে বাংলাদেশে থাকা বড় মেয়ে মা এরিকোর কাছে থাকবে। আর বাংলাদেশে থাকা মেজো মেয়ে বাবা ইমরানের কাছে থাকবে।
রায়ে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই নিজেরাই শিশুদের সম্পূর্ণ দেখার অধিকার নিশ্চিত করবে। জেসমিন মালেকা শরীফের সম্পূর্ণ দেখা করার অধিকার বাবাকে দেয়া মায়ের দায়িত্ব এবং লায়লা লিনা শরীফকে তার মায়ের সম্পূর্ণ দেখার অধিকার দেয়া বাবার কর্তব্য। পক্ষগুলোও তাদের সাথে সীমিত সময়ের জন্য নিজ নিজ সন্তানকে পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে কঠোরভাবে নিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে।
আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
এরিকোর আইনজীবী শিশির মনিরের তথ্যমতে, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা: এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশী আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। তিন মেয়ে টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি ইমরান তার স্ত্রী এরিকোর সাথে ডিভোর্স আবেদন করেন। এর পর ২১ জানুয়ারি ইমরান স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তাতে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ তার প্রস্তাব নাকচ করে। পরে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাস স্টপেজ থেকে ইমরান তাদের বড় দুই মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
ওই ঘটনার চার দিন পর ২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এর মধ্যে ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সাথে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এ দিকে, একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি দুই মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে ছোট মেয়ে সানিয়া হেনাকে রেখে ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
তিনি ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন উচ্চ আদালত। কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট একই সালের ২১ নভেম্বর দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সাথে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা