২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হেলথ টিপস

-

আঁশে ভরপুর কলায় মিলবে তিন ধরনের প্রাকৃতিক চিনি-সুক্রোজ, ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ। খাওয়ার সাথে সাথেই একটি কলা আপনাকে দেবে পর্যাপ্ত শক্তি।
গবেষকরা প্রমাণ দেখিয়েছেন, একটি কলা পরবর্তী ৯০ মিনিট গতরখেটে কাজ করার শক্তি দেয়। বলাইবাহুল্য বিশ্বের সেরা অ্যাথলেটদের কাছে খাদ্য তালিকার সেরা খাবার কলা।
মনে করেছেন কলা কেবল শক্তিই দেয়? ভুল করেছেন! কলা আপনাকে বিভিন্ন রোগভোগ থেকে মুক্ত রাখবে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলার স্থানটি পাকাপোক্ত করে নেয়াই ভালো। হতাশাগ্রস্ত! কলা খান। এক গবেষণায় দেখা গেছে হতাশা ভুগছেন এমন মানুষ কলা খেলেই ভালো অনুভব করেন। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা দেখিয়েছেন, কলায় পর্যাপ্ত ট্রাইটোফ্যান থাকে। এটি এমন এক ধরনের প্রোটিন যা শরীরে সেরোটোনিন সৃষ্টি করে। এতে শরীরে আলগা ভাব আসে। ফলে মুডটাই পাল্টে যায় আর সাধারণত মনে একটা খুশি খুশি ভাব এনে দেয়।
পিএমএস (প্রিমেনেস্টেরাল সিনড্রম)-এ ভুগে পিল খাচ্ছেন? ছেড়ে দিন। কলা খান। কলায় যে ভিটামিন বি-সিক্স রয়েছে ওটা আপনার রক্তের গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণ করবে। এতে আপনার মুড পাল্টে যাবে। শরীর ভালো থাকবে।


রক্তশূন্যতায় ভুগছেন। এ ক্ষেত্রেও কলা উপকারী ফল দেয়। কলায় আছে উচ্চমাত্রার লৌহ। কলা রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় ফলে রক্তশূন্যতা লোপ পায়। রক্তচাপ! তাতেও কলা উপকারী। কলায় উচ্চমাত্রায় পটাসিয়াম আছে, পক্ষান্তরে এতে লবণের মাত্রা খুব কম। রক্তচাপের বিরুদ্ধে লড়তে এমনটাই প্রয়োজন। গবেষকরা বলছেন, কলা উৎপাদকরা এই ঘোষণা দিতেই পারেন যে, তাদের কারণে রক্তচাপ আর পক্ষাঘাতের প্রতাপ কমছে। শরীর কষা! পায়খানা হচ্ছে না এমন রোগে কলার গুণ অসাধারণ। উচ্চ আঁশযুক্ত কলা এমন এক খাবার যা এই অবস্থা থেকে মুক্তি দেবে। হ্যাংওভার কাটাতেও কলা। অতিরিক্ত মদ্যপানে শরীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে যখন চলে যাবে তখন এর প্রতিক্রিয়া কাটাতে মধু দিয়ে কলামিশ্রিত মিল্কশেক এক গ্লাস খেয়ে ফেললে শরীর নিয়ন্ত্রণে আসবে। কলা আপনার পাকস্থলীকে ঠাণ্ডা রাখে। মধু মেশালে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ে আর দুধ পুরো পাকপ্রণালিতে পানিশূন্যতা কাটায়।
হৃদযন্ত্রে প্রদাহ কমাতেও কলার গুণ অনন্য। কলায় এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। সুতরাং গ্যাস্ট্রিকের কারণে যখন হৃদযন্ত্রে প্রদাহ হতে থাকে তখন কলা আপনাকে স্বস্তি দেবে।
সকালের অস্বস্তি দূর করবে কলা। দুই বেলা খাবারের মাঝখানে একটি কলা খেয়ে ফেললে তা রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে রাখবে। এতে সকালের যে অস্বস্তি ও দুর্বল ভাব তা কমাবে।
আলসার থেকে মুক্তি পেতে কলা। কলা পাকস্থলীকে সবচেয়ে শান্ত রাখে কারণ এটি অত্যন্ত নরম একটি খাদ্য। কলা অ্যাসিডিটি কমায়। আর আলসারে পাকস্থলীতে যে আঁচড় পড়েছে তার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে না।
এগুলো গেল রোগমুক্তির দিক। এর বাইরে কলা আরো কিছু সুবিধা দেয় আপনার শরীরে। কলায় ভিটামিন বি উচ্চমাত্রায়। যা স্নায়ুকে সবল করে। বেশি ওজন হলে তা কমাতেও কলা খাওয়ার অভ্যাস উপকারি। কর্মস্থলে যখন কাজের বাড়তি চাপ থাকবে তখন চকোলেট চিপস না থেকে কলার দিকে মন দিতে পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। স্কুলে টিফিনে কলা খেলে শিশুরা মেধার পরিচয় দেয় সেটিও গবেষকরা প্রমাণ করেছেন। এতে শিক্ষার্থী ক্লাসে বেশি মনোযোগী থাকে বলেই দেখেছেন তারা।
কলায় তাপ নিয়ন্ত্রণ হয়। এত ঠাণ্ডা খাদ্য আর নেই। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের শরীর ও মন উভয়কেই ঠাণ্ডা রাখে কলা।
সুতরাং কলা অনেক রোগের মহৌষধ। যখন আপনি একটি কলাকে একটি আপেলের সাথে তুলনা করবেন তখন কলায় আমিষের পরিমাণ চার গুণ বেশি, শর্করার মাত্রা দুই গুণ বেশি, ফসফরাস তিন গুণ বেশি, ভিটামিন এ ও লৌহ পাঁচ গুণ বেশি, অন্য ভিটামিন ও খনিজের মাত্রা দুই গুণ বেশি।এ ছাড়াও কলা পটাসিয়াম সম্মৃদ্ধ। চার দিকে যা কিছু খাদ্য মেলে তার মধ্যে এটি সেটা মূল্যবান খাবার সুতরাং এখন হয়তো সময় এসেছে কলাকে প্রিয় খাদ্য হিসেবে মেনে নেয়ার। ইন্টারনেট।


আরো সংবাদ



premium cement