২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বেইলি রোডের অভিজাত ইফতারে বেড়েছে খরচ, কমেছে ক্রেতা

রাজধানীর বেইলী রোডে ঐতিহ্যবাহী ইফতারি : নয়া দিগন্ত -

দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীর বেইলি রোডে ইফতার পণ্যের বিক্রি জমছে না। ক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি জিনিসের দামই গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। বিশেষ করে গোশতের আইটেমগুলোর দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় ইফতারি পণ্যের দাম না বাড়িয়েও উপায় ছিল না। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে বলেও তারা জানান।
রমজানে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতারের বেশ সুখ্যাতি আছে। রোজার দিনগুলোতে সেখানে বাহারি ইফতার পণ্যের পসরা বসে। দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। তবে শুধু চকবাজারই নয়, রাজধানীর বেইলি রোডের অভিজাত ইফতারও বেশ ঐতিহ্যবাহী। পুরান ঢাকার পাশাপাশি রমজান মাসে বেইলি রোডেও ইফতার বিক্রির হিড়িক পড়ে। এখানেও বিক্রি হয় নানা ধরনের ইফতারসামগ্রী। তবে এবার বেইলি রোডে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতা সমাগম হলেও তা আগের মতো বেশি নয় বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
রমজানের দ্বিতীয় দিন গতকাল শনিবার বিকেলে বেইলি রোডের ইফতার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বিশেষ করে এখানকার দোকানগুলোর মধ্যে নবাবী ভোজ, পিঠা ঘর ও জাগেরী রেস্টুরেন্ট, ক্যাপিটাল ইফতার বাজার ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে ইফতারসামগ্রীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চপ, কাবাব, কাচ্চি বিরিয়ানি (খাসি), ফিরনি, খাসির লেগ রোস্ট, বোরহানি, চিকেন রোস্ট (আস্ত), চিকেন ফ্রাই, চিকেন সমুচা, চিকেন ললি, মগজ ভুনা, খাসির হালিম, খাসির গ্রিল চাপ, গরুর চাপ, লুচি, ভেজিটেবল রোল, স্প্রিং রোল, কিমার চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, বেসন চপ, ছোলা, বাসমতির জর্দা, চাটনি, পনির সমুচা, নিমক পোড়া, বুন্দিয়া, হালিম, দইবড়া ও কিমা পরোটা খুব জনপ্রিয়।
বেইলি রোডের এই দোকানগুলোতে বছরের অন্য সময় ফাস্টফুড ও পিঠা বিক্রি হলেও রমজানে দোকানিরা ইফতারসামগ্রী বিক্রিতেই ব্যস্ত থাকেন। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
নবাবী ভোজে দেখা যায়, ঘি ও জাফরান দিয়ে ভাজা স্পেশাল বোম্বে জিলাপি ৩৫০ টাকা কেজি, রেশমি জিলাপি ৬০০ টাকা, বুন্দিয়া ৪০০ টাকা, জর্দা ২৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি দই ৩৯০ টাকা, ক্ষিরসা ফালুদা ৩০০ টাকা, ফিরনি ছোট কৌটা ৬০ টাকা, বড় কৌটা ২৫০ টাকা, লাচ্ছি ২৫০ টাকা, জাফরানি পেস্তা বাদামের শরবত ৩০০ টাকা, বোরহানি ছোট ১২০ টাকা এবং বড় বোতল ২৩০ টাকা, লাবাং ১২০ টাকা, দই বড়া কেজি ৪০০ টাকা, চিকেন ঝাল ফ্রাই কেজি ১৪০০ টাকা, বিফ ভুনা হাড় ছাড়া ১৬০০ টাকা, মাটন ভুনা ১৮০০ টাকা, চিকেন রোস্ট পিস ১৮৫ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৬৫০ টাকা, মাটন লেগ রোস্ট পিস ৬০০ টাকা, গরুর তেহারি ২৮৫ টাকা, মোরগ পোলাও হাফ ২৮০ টাকা এবং স্পেশাল কাচ্চি বিরিয়ানি ৩০০ টাকা, চিকেন গ্রিল কোয়ার্টার ১৫০ টাকা, হাফ ২৮০ টাকা এবং ফুল ৫২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হালিম বিক্রি হচ্ছে চিকেন, মাটন ও বিফের। দাম ৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া পেঁয়াজু, বেগুনিসহ বিভিন্ন ধরনের চপ ১৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নবাবী ভোজের ম্যানেজার সরোয়ার নয়া দিগন্তকে বলেন, এবার প্রতিটি কাঁচামালের দাম বেড়েছে। মুরগি, গরু ও খাসির গোশতের দাম বেড়েছে। এ কারণে আমাদের গোশতের বিভিন্ন আইটেমের দামও বেড়েছে। তিনি জানান, গত বছর চিকেন ঝাল ফ্রাই ছিল ১২০০ টাকা এবার ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। একইভাবে বিফ ও মাটনের দামও ২০০ টাকা করে বেড়েছে। তবে এ দাম ইফতার উপলক্ষে বাড়ানো হয়নি। যখন মুরগি, গরু-খাসির দাম বেড়েছে সে সময় থেকেই দাম বেড়েছে। ওই দামেই আমরা এখন বিক্রি করছি। এ ছাড়া অন্যান্য আইটেম ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে তিনি জানান। আবার কিছু পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে বলেও তিনি জানান।
রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে বেইলি রোডের পিঠা ঘরে বয়োবৃদ্ধ মাকে নিয়ে ইফতার কিনতে আসেন শফিকুর রহমান। ইফতার কিনে বাসায় ফেরার সময় তিনি বলেন, মায়ের আবদারে এখানে ইফতার কিনতে এসেছি। হালিমসহ অল্প কয়েকটি আইটেম কিনেছি। তাতেই দুই হাজার টাকা লেগেছে। তিনি জানান, এখানকার ইফতারের মান বেশ ভালো তাই ইফতার কিনতে এলাম। তবে প্রায় সব ইফতারের দামই বেশি মনে হচ্ছে।
জাগেরী রেস্টুরেন্টে গত বছরের মতোই নানা রসালো পণ্যের সমাহার। হালিম, জিলাপি, কাবাব থেকে নানা রকম পিঠাও রয়েছে এখানে। ঘি দিয়ে ভাজা জিলাপি কেজি ৩৮০ টাকা, রেশমি জিলাপি ৪৮০ টাকা, ছোলা বুট ৩৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান ছোলা বাটোরা ৪৬০ টাকা, চিকেন ঝাল ফ্রাই হাফ ১৮০ টাকা, গরুর গোশত ভুনা ১৬০০ টাকা, খাসির গোশত ভুনা ১৮০০ টাকা, মোরগ পোলাও হাফ ২৮০ টাকা, গরুর তেহারি হাফ ২৯০ টাকা, চিকেন রোস্ট পিস ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের পিঠা ৪০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দোকানের ম্যানেজার বাশার নয়া দিগন্তকে বলেন, পিঠার দাম গত বছরের মতোই আছে। তবে গোশতের আইটেমগুলোর দাম কিছুটা বেড়েছে। ছোট আইটেমগুলো ২০ টাকা এবং গরু-খাসির গোশত ভুনায় ২০০ টাকা বেড়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সবকিছু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এ কারণেই দাম বাড়াতে হয়েছে। ক্রেতা গত বছরের চেয়ে কম আসছে বলে তিনিও জানান।


আরো সংবাদ



premium cement
সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার কবরে শুয়ে ছেলের প্রতিবাদ ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরো ৭১ জন নিহত পানছড়ি উপজেলায় চলমান বাজার বয়কট স্থগিত ঘোষণা আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে : দুদু যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের এন্ডারসন লড়াই ছাড়া পথ নেই : নোমান জার্মানির অর্থ যেভাবে সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধে ব্যবহার হচ্ছে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেনের মেয়াদ বাড়ল

সকল