২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ছাত্রলীগ নেতার চাঁদাবাজি

‘আমার জন্যে টাকা পয়সা কি রাখছেন’

-

‘মার্কেটে দোকান বিক্রি হইছে জানেন? জানলে আমার জন্যে টাকা-পয়সা কি রাখছেন?’ পলাশী মার্কেটে সম্প্রতি একটি দোকান বিক্রির ঘটনায় চাঁদা না পেয়ে দোকান মালিক সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: মাহবুবের সাথে এভাবেই কথোপকথন শুরু করেন অভিযুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকার।

সূত্র জানায়, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একটি বিভাগের চেয়ারম্যান পলাশী মার্কেটে একটি নতুন দোকান কেনেন। সেই দোকান কেনার সময় ওই শিক্ষকের অনুরোধে উপস্থিত ছিলেন দোকান মালিক সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: মাহবুব। সেই সূত্র ধরে তাকে ফোন করে চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা। প্রথমে চাঁদা দাবি করে পরে সেটা না পেয়ে মার্কেটে ঢুকতে না দেয়া ও দেখে নেয়ার হুমকিও দেন তিনি। এ বিষয়ের একটি ফোন কল রেকর্ড নয়া দিগন্তের হাতে আছে।

কল রেকর্ডে মিশাত সরকারকে ‘মার্কেটের দোকান বিক্রি হইছে, আমার জন্যে টাকা-পয়সা কি রাখছেন’, ‘আমি স্যারের সাথে কথা বলবো না, বিকেলের মধ্যে ব্যবস্থা করেন না হলে কিন্তু আপনার খবর আছে’, ‘নয়-ছয় শুরু করছস, তুই কি শুরু করছস, টাকা এনে দিলি না কেন’, ‘এটা যদি শেষ না করিস তাহলে তোরে মার্কেটে ঢুকতে দিবো না’, ‘টাকা-পয়সার লেনদেন হয় আমাদের দিস না কেন’, ইত্যাদি বলতে শোনা যায়। ভুক্তভোগী মাহবুব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক পলাশী মার্কেটে একটা দোকান কিনেছে। স্যার যখন ছাত্র ছিলেন তখন থেকেই আমাকে চিনতেন। সেই হিসেবে তিনি আমাকে তার দোকান কেনার সময় সাক্ষী হিসেবে থাকতে অনুরোধ করেন। আমি একসময় মার্কেটের সেক্রেটারি ছিলাম। এখন আমাদের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ, নতুন কমিটি হয়নি। যেহেতু একজন শিক্ষক বলেছেন, তার সম্মানার্থে যে কেউ এখানে থাকবে। সেই হিসেবে আমি দোকান কেনার সময় সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলাম।

কলরেকর্ড আছে জানিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকার বলেন, একজন যদি হুট করে কিছু বলে, সেক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নাই। আর যে ফোন রেকর্ডের কথা বলছে এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে কেউ যদি কিছু বলে সেটার কি কোনো প্রমাণ আছে। এগুলোর কোনো সত্যতা নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অফিসিয়াল অভিযোগ আসেনি। যদি এ ধরনের অভিযোগ আসে তাহলে আমরা অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। আর ছাত্রলীগে কোনো অপকর্মের সুযোগ নেই। কেউ যদি এমন করে তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আসতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement