২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
বিশ্ব পানি দিবস আজ

পানির উৎস রক্ষায় উদ্যোগ নেই

আজ বিশ্ব পানি দিবস। নিরাপদ পানি প্রাপ্তি মানুষের অধিকার হলেও বিনা বাধায় দেশের নদ-নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষণের কবলে পড়ছে। কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য অবাধে মিশছে নদীর পানিতে। বুড়িগঙ্গার ছবিটি বাবুবাজার ব্রিজ থেকে তোলা : নাসিম সিকদার -


দখল দূষণে নামমাত্র বেঁচে আছে রাজধানীর চারপাশের নদী। গ্রাম নগরে অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট বাঁধ নির্মাণে ভরাট হয়ে শুকিয়ে চৌচির খাল-বিলসহ শত নদ-নদী। পানি মিলছে না হাওর জলাশয়ে। এমতাবস্থায় খাবার পানি থেকে শুরু করে কৃষিতে ব্যবহৃত পানির জন্য সর্বত্র ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। ফলে আশঙ্কাজনকহারে পানির স্তর নিচে নামার পরও পানির উৎস রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে পানির স্তর নামতে থাকলে এক সময় খাবার পানির সঙ্কটের সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে। তাই এর সমস্যা সমাধানে শহর, গ্রাম এবং শিল্প এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমিয়ে বৃষ্টি বা উন্মুক্ত জলাধারের পানির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।


একাধিক গবেষণা সংস্থা বলছে, বর্তমানে দেশের প্রায় ১৪০টি নদ-নদী মৃতপ্রায়। অনেক নদীর অস্তিত্ব এখন বিলীনের পথে। এতে করে দেশে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামার হার দিন দিন বাড়ছে। তার প্রমাণ একযুগ আগেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬০ থেকে ৭০ ফুট গভীরে পানি পাওয়া যেত। কিন্তু এখন কোথাও কোথাও ১৫০ ফুট বা তারও নিচে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
তাদের মতে, টানা অনাবৃষ্টির ফলে ভূগর্ভস্থ পানির চাহিদা পর্যাপ্ত পূরণ হচ্ছে না। আর ভূ-উপরিভাগের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাওড়সহ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ভূগর্ভে যায় না। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর খুব দ্রুত নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর ভূগর্ভের পানির স্তর দুই থেকে পাঁচ মিটার করে নিচে নামছে। এতে পানিতে আর্সেনিকের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ভূমিধস ও মাটি দেবে যাওয়াসহ নানা দুর্ঘটনার।


অপর এক সংস্থার তথ্যমতে, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বে সেচের খরচে শীর্ষে এখন বাংলাদেশ। দেশের কৃষিব্যবস্থা এখন প্রধানত সেচনির্ভর। নদী-নালা ও খালে-বিলে পানি না থাকায় পাওয়ার পাম্পে নদী-নালার পানিতে সেচ এখন নেই বললেই চলে। ফলে নদী ও খাল-বিলের পাড়েও এখন গভীর নলকূপ বসেছে। তাতে কৃষিতে সেচ দেয়ার সাথে খাবার পানির চাহিদাও তাতে মিটানো হচ্ছে। যার সম্পুর্ণ চাপ পড়ছে ভুগর্ভস্থ পানির ওপর। ফলে ঢাকার পাশাপাশি বরেন্দ্র এলাকাতেও পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় যেখানে ৫০ বছর আগে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার ২-৩ মিটারের মধ্যে ছিল, বর্তমানে সেখানে ৮৬ মিটারে নেমে গেছে। এটা আমাদের জন্য খুবই এলার্মিং। কারণ প্রতিদিন খাবার পানির চাহিদা বাড়লেও ব্যবহারযোগ্য পানির পরিমাণ কমে আসছে। এতে করে এটা পরিষ্কার যে এখনি যদি পানির উৎস রক্ষায় ব্যবস্থা না নেয়া হয় তবে আগামীতে এর ভয়াবহতা সহজেই অনুমেয়।


এদিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হবে ‘বিশ্ব পানি দিবস’। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওতে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেখানে পানি সম্পদের জন্য একটি বিশেষ দিন ঘোষণার দাবি তোলা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং এরপর থেকে এ দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন চৌগাছায় বাসচাপায় হেলপার নিহত ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত

সকল