২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঘরসংসার বিমানেই

-

আগুনের গ্রাসে নিজের ঘরবাড়ি হারিয়ে বোয়িং বিমানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আমেরিকার রূপটানশিল্পী জো অ্যান ইউসেরি। যেমন ভাবা, তেমন কাজ! তড়িঘড়ি একটি পুরনো বোয়িং ৭২৭ কিনে ফেলেন। সেখানেই নতুন করে সংসার সাজাতে থাকেন।
বোয়িং বিমানে ঘরসংসার পাতার ভাবনাটা জোয়ের মাথায় ঢুকিয়েছিলেন তার শ্যালক। পেশায় যিনি ছিলেন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলার। ভাঙাচোরা পুরনো জিনিসপত্র, ফেলে দেয়া লোহার ছাঁটের সাথে বোয়িং বিমানটিরও সদ্গতি হওয়ার কথা ছিল। তবে ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার আগে সেটিকে কিনে নেন জো।


মিসিসিপির বেনোয়া শহরে নিজের এক টুকরো জমি ছিল জোয়ের। পুরনো বিমানটি কিনে সেটিকে সেখানেই নিয়ে যান তিনি। মাস ছয়েক ধরে বিমানটি আশপাশ থেকে অন্দরের বেশির ভাগ মেরামতিও করেন নিজের হাতে। এর পর সেটিকে বাসযোগ্য করে তোলেন।
মাস ছয়েক পরে পুরনো বিমানটির যেন নবজন্ম হয়েছিল। সাজানো গোছানো বিমানের ভেতরে ছিল দেড় হাজার বর্গফুটের বিশাল ড্রয়িং রুম, তিনটে শোয়ার ঘর, দুটো বাথরুম। বিমানের ককপিটের জায়গায় আস্ত একখানা টাবও রেখেছিলেন জো।
বিমানের ভোল পাল্টাতে সবমিলিয়ে তখনকার দিনে জোয়ের খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার ডলার।


১৯৯৫ থেকে ’৯৯ সাল পর্যন্ত ওই বিমানে বসবাস করেছিলেন জো। বিমানটিকে ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় তা এমনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে সেটির আর মেরামত করা যায়নি। ফলে তার পর থেকে বিমানে বসবাসের চিন্তা ছাড়তে হয়েছিল জো অ্যান ইউসেরিকে।
নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে একটি রেডিয়োর অনুষ্ঠানে জোয়ের কথা জানতে পেরেছিলেন ব্রুস। পেশা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ব্রুসের ব্যক্তিগত বিমানচালনার লাইসেন্স রয়েছে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, একবার রেডিও শুনতে শুনতে গাড়ি চালিয়ে নিজের বাড়ি ফিরছিলাম। রেডিওতে জো অ্যানকে নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। তা শুনে মনে হয়েছিল, কী অসাধারণ কাহিনী! পরের দিন থেকেই ওই রকমভাবে বিমানে থাকব বলে এ ধার-ও ধার ফোন করতে শুরু করে দিয়েছিলাম।
এখন আমেরিকার ওরেগনের হিলসবোরোর জঙ্গলে নিজস্ব বিমানে থাকেন ব্রুস। তিনি জানিয়েছেন, কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে বিমানের ভেতরেই তার ঘরসংসার। তার মতে, এভাবে বসবাসের কথা চিন্তাভাবনার জন্য জোয়ের কাছে কৃতজ্ঞ।
কুড়ি বছর ধরে বোয়িং ৭২৭ বিমানে রয়েছেন ব্রুস। তিনি বলেন, চিরাচরিতভাবে কোনো বাড়ির ভেতরে আর কখনই থাকতে পারব না। বিমানে সংসার পাতার জন্য গাঁটের বহু কড়িও গচ্চা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে তখনকার সময় বিমানে ঘর পাততে ২২০,০০০ ডলার খরচ করতে হয়েছিল ব্রুসকে। তার মধ্যে ওই বিমানটি কিনতেই বেশির ভাগ অর্থ খরচ হয়েছিল। ইন্টারনেট।


আরো সংবাদ



premium cement