উভয় শেয়ারবাজারে বেড়েছে লেনদেন, সূচকের মিশ্রভাব

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একটি বাদে বাকি চার ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ দিন দুই স্টকেই লেনদেন পরিমাণ বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেন বেড়ে সাড়ে সাত শ’ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। আর সিএসইর লেনদেন বেড়ে সাড়ে ১৭ কোটি টাকার ঘরে এসেছে।
লেনদেন বৃদ্ধি ও সূচক কমার প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারে ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। এ দিন বিক্রেতার চাপ ক্রেতার চেয়ে বেশি ছিল। একই অবস্থা ছিল সিএসইতে। লেনদেন বৃদ্ধিতেও ডিএসইতে ১৩৩টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ৪৩টির বেড়েছে।
সিএসইতে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ৩৭টির বেড়েছে। চলতি বছরের শুরুতে শেয়ারবাজারের লেনদেন ছিল মন্দা। একই সাথে সূচকে ছিল পতন। সময়ে পালাক্রমে বাজার সেই মন্দা লেনদেন থেকে বেরিয়ে এসেছে। বছরের শুরুর ডিএসইর দেড় শ’ কোটি টাকার লেনদেন বর্তমানে সাড়ে সাত শ’ কোটি টাকার কাছাকাছিতে চলে এসেছে। লেনদেন বৃদ্ধির একই অবস্থা সিএসইতেও। গতকাল ডিএসইতে ৭৫২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৬৮৭ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার। এ দিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ দশমিক ২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট ও ডিএসইএস সূচক ৫ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রেমে ২ হাজার ২২৬ দশমিক ২৬ পয়েন্টে ও ১ হাজার ৩৬৮ দশমিক ২০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪৩টি এবং কমেছে ১৩৩টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৭১টির। এ দিন ডিএসইতে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এ দিন জেনেক্স ইনফোসিস ১০১ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এ দিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ছয় কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা তিন কোটি ৬২ লাখ টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ২৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিক ২৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা, আমরা নেটওয়ার্ক ২৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশন ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং জেমিনি সি ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অন্য দিকে সিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এ দিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৭৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৭টি, কমেছে ৬৩টি ও পরিবর্তন হয়নি ৭৫টির।
এ দিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৮৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৪৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স সূচক ২ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৩২ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৬০ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ১৪১ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে।
এ দিন সিএসইতে আইপিডিসির শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এ দিন আইপিডিসি পাঁচ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এ দিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনালী পেপার এক কোটি ৯৩ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিক এক কোটি ১২ লাখ টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৯২ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ৮৩ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ৫৬ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ৫৫ লাখ টাকা, বেঙ্গল ইউন্ডসর ৫৩ লাখ টাকা, আইটিসি ৪২ লাখ টাকা ও ওরিয়ন ফার্মার ৩৬ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
গতকাল ব্লক মার্কেটে মোট ৬০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৭৯ কোটি ৩৩ লাখ ৯১৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে যার আর্থিক মূল্য ৬৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের। কোম্পানিটি ১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। আইপিডিসি ফিন্যান্স ১১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সাত কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- এডিএন টেলিকম দুই কোটি ১৭ লাখ, বিএটিবিসি দুই কোটি ১৬ লাখ, বেক্সিমকো সাত কোটি ৫০ লাখ, ব্র্যাক ব্যাংক এক কোটি ২০ লাখ, বেক্সিমকো ফার্মা পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এক কোটি ৪৭ লাখ, সিলভা ফার্মা দুই কোটি ২৭ লাখ, স্কয়ার ফার্মা এক কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।