২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে : জামায়াত

-

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি রাতে গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের আমির ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল করিমকে এবং ৩০ জানুয়ারি রাতে নড়াইল পৌরসভার বিজয়পুর এলাকার হাসমত ফকিরের বাড়ি থেকে জামায়াতের ১১ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি এসব গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, সরকার কোনো দলকেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিচ্ছে না। সরকার জামায়াতে ইসলামীর হাজার হাজার নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালাচ্ছে। জুলুম-নির্যাতন সত্ত্বেও জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দেশের সংবিধান প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার দিয়েছে। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার জনগণের বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। দেশকে আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভিন্নমতের মানুষকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের ওপর জুলুম-নিপীড়নের পরিণতি কখনো শুভ হয় না।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র হরণকারী জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে জুলুম-নিপীড়ন বন্ধ করে আবদুল করিমসহ জামায়াতে ইসলামীর গ্রেফতারকৃত সব নেতাকর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ : মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেন, ৩১ জানুয়ারি সরকারের এক ঘোষণায় বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। শীত মৌসুম শেষ না হতেই দেশে এখনই লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানই তাদের সময়মতো ও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। এ অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অন্যায়, অযৌক্তিক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ফলে একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেই যাচ্ছে। গত ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ৫ শতাংশ এবং গত নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ২০ শতাংশ। বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে গত ১৪ বছরে খুচরা পর্যায়ে ১২ এবং পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। দ্রব্য-মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস। এখন আবারো নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে এর প্রভাব সব কিছুর ওপর পড়বে। এক দিকে যেমন মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে, অন্য দিকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং শিল্পখাতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও অর্থনৈতিক দুরবস্থাকে বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের শিল্পখাতকে রক্ষার স্বার্থে বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এ জামায়াত নেতা।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল