২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আড়াইহাজারে জাপানিদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন

হাজার একর জায়গাতে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন

শিল্প করেছে সিঙ্গার ও জার্মান রুডলফ
-

বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায়। এক হাজার একর জমিতে নির্মাণাধীন এই জোনে ইতোমধ্যে কারখানা নির্মাণ শুরু করেছে তুরস্কের সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং জার্মান কোম্পানি রুডলফ। সড়কসহ অবকাঠামোর কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সিঙ্গার ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে অন্য দিকে রাসায়নিক কোম্পানি রুডলফ ৭০ লাখ ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বাংলা ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) সূত্র জানায়, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সিঙ্গার তুরস্কের প্রতিষ্ঠান আর্সেলিক-এর সাথে যৌথভাবে কারখানা করছে। বহুজাতিক এই ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স ফার্মটি আগামী বছরের শেষ নাগাদ গ্রিন ফ্যাক্টরিতে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার উৎপাদন শুরু করার অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পথ চলা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪ সালে জাপান সফরের সময়। একই বছর জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়। ২০১৬ সালে জাইকা বাংলাদেশে একটি জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেয় এবং একই বছর জাপান সরকার বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশনকে ডেভেলপার হিসেবে নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করে। ২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে জাইকা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পক্ষে মত প্রদান করে। পরবর্তীতে যৌথ উদ্যোগে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ২০১৯ সালে বেজা ও সুমিতোমো করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেজা ২০১৯ সালে প্রস্তাবিত এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়নকাজ শুরু করে। প্রায় এক হাজার একরের ওপর নির্মাণাধীন জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৫০০ একর ভূমি উন্নয়নকাজ শেষপর্যায়ে রয়েছে পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক, রিটেনশন পন্ড, নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। নির্মাণ শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। এ পর্যন্ত কোম্পানির অনুকূলে ১৮০ একর উন্নত জমি বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোনকে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তা শিল্প কারখানা তৈরির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অবশিষ্ট জমি শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ এস ই জেড সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গার এবং জার্মান কোম্পানি রুডলফ প্রতিষ্ঠান দু’টি ৪০ একর জমি নিয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গার নিয়েছে ৩৫ একর জমি। ৬ ডিসেম্বর আরো দু’টি জাপানি প্রতিষ্ঠানের সাথে নতুন করে চুক্তি হয়। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বেজার শেয়ার থাকছে ২৪ শতাংশ, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ১৫ শতাংশ এবং সুমিতোমো করপোরেশনের ৬১ শতাংশ।
গতকাল চুক্তি স্বাক্ষর করে ওনদা করপোরেশন এবং নিক্কা কেমিক্যালস। ওনদা করপোরেশন দেশের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে গ্যাস মিটার অ্যাসেম্বলিং ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করবে। এ ছাড়া নিক্কা কেমিক্যালস বন্ডেড ওয়্যারহাউজ ও কেমিক্যাল প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। এ ছাড়া আরো বিভিন্ন দেশের ৪০টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। শিগগিরই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করা যাবে বলে জানা গেছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, আমরা ভারত ও চীন সরকারের সাথে জিটুজি ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে কাজ শুরু করেছি। এ ছাড়া সৌদি আরব এবং সিঙ্গাপুরের সাথে জিটুজি ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের আলোচনা চলমান আছে।


আরো সংবাদ



premium cement