২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈশ্বরদীতে বালুমহাল দখল নিয়ে আ’লীগের দু’পক্ষে গোলাগুলি

-

পাবনার ঈশ্বরদীতে বালু ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দু’জন গুলিবিদ্ধসহ চারজন আহত হয়। গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- যুবলীগ কর্মী মাসুম (৩৫), সম্রাট (৩৫), মিরাজ (৩০) ও সুইট (৩২)। আহতদের মধ্যে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার হাসান আলীর ছেলে মাসুম ও আমবাগান এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে সম্রাটকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহত অপর দু’জনকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।


স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু সাথে বালুর ব্যবসা নিয়ে পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের মতবিরোধ চলছিল। চেয়ারম্যান পিন্টুর বিআইডব্লিওটিএর কাছ থেকে কেনা বালুর আধিপত্য নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয়। বালু উত্তোলনের পর পিন্টু প্রায় তিন মাস হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে বালু স্তূপ করে রেখেছেন। এ বালুর দখল নিয়ে পিন্টু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জহুরুল ইসলাম মালিথার মধ্যে আবারও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বলেন, পদ্মা নদী ড্রেজিং করে তোলা বালু আমি বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে টেন্ডারে কিনেছি। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল এ বালু পরিবহন ও বিক্রিতে বাধা দেয়। এ জন্য তিন মাস বালু বিক্রি বন্ধ আছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে শনিবার থেকে বালু বিক্রি শুরুর কথা ছিল। এরই মধ্যে অপরপক্ষ আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ দিকে জহুরুল ইসলাম মালিথার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে কেনা বালু পিন্টু অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন যে বালু আছে সেগুলো পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের। সেগুলো দখল করে বিক্রি করার জন্য পিন্টু সেখানে লোকজন জমায়েত করেন। আমাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে খাওয়া ধাওয়ার আয়োজন করেছিল।


বিষয়টি নিশ্চিত করে পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে পুলিশের একটি টিম ছিল। পুলিশ দ্রুত সংঘর্ষ থামিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের সময় গুলির শব্দ শোনা যায় এবং একটি জিপ গাড়ি, পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে চারজন আহত হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, আহত মাসুম ও সম্রাটকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাদের শরীরে লাঠি ও ইটের আঘাতে চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, বালু ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টুর সঙ্গে পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরোধ ছিল। সবার সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা হয়। তার পরও কেন মারামারির ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারলাম না।


আরো সংবাদ



premium cement