২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডিসেম্বরের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি আসবে থাই উপসাগর থেকে

-

ডিসেম্বরের সম্ভাব্য যে ঝড়টি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে আসবে থাইল্যান্ড উপসাগর (গালফ অব থাইল্যান্ড) থেকে। থাই উপসাগর থেকে প্রক্রিয়াটি লঘুচাপ আকারেই বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। সামনের ডিসেম্বর ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যেই এটি বঙ্গোপসাগর থেকে এসে ঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি হলে এর নাম ম্যানদৌস। এটা আরব আমিরাতের দেয়া একটি নাম।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে ঝড়টি যে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে তা ৮০ ভাগ নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায়। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো হবে না, একটু ব্যতিক্রমধর্মী হবে। সম্ভাব্য ঝড়টি থাইল্যান্ড উপসাগরে সৃষ্টি হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করবে লঘুচাপ আকারে ৪ থেকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।
মোস্তফা কামাল বলেন, লঘুচাপ আকারে আসার পর নিম্নচাপে রূপ নেবে এবং ৬ ডিসেম্বর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ আকারে একদিন মাত্র সাগরে অবস্থান করে ৭ ডিসেম্বর এটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ৮ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী হতে পারে। পূর্ণিমার সাথে ঊর্ধ্বাকাশে জেট স্ট্রিমও ঘূর্ণিঝড়কে প্রভাবিত করতে পারে। এসব কারণে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
প্রসঙ্গত ৮ ডিসেম্বর এই এলাকায় চাঁদের পূর্ণিমা অবস্থা থাকবে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ৬ ডিসেম্বর সৃষ্টি হলে তা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে। ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীর মিলিত প্রভাবে ওই সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করবে। পূর্ণিমার এক ধরনের আকর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের সাথে ঘূর্ণিঝড়ের টানের ফলে জলোচ্ছ্বাস এক সাথে লবণাক্ত পানি উপকূলের বাঁধ অতিক্রম করে লোকালয়ে চলে আসতে পারে।
মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি এখনো সৃষ্টিই হয়নি। ফলে সুনির্দিষ্ট করে সবকিছুর পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যে স্থানেই এটি উপকূলে উঠে আসুক সেখানে জলোচ্ছ্বাস আসতে পারে একটু বেশি বড় ও উঁচু হয়ে। মোস্তফা কামাল বলেন, যে স্থানের উপকূল দিয়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত করুক সে স্থানেই স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের বরিশাল, খুলনা, ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতও হতে পারে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে।


আরো সংবাদ



premium cement