২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সেচ কাজ শিখতে ৬ দেশে যেতে চান ২৪ কর্মকর্তা

বিদেশে প্রশিক্ষণ খাত বাতিল করব : পরিকল্পনা সচিব
-

সেচের মাধ্যমে হাওর এলাকার ভূ-উপরিস্থিত পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে চায় কৃষি মন্ত্রণালয়। আর এর জন্য বাড়তি প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হবে। এই সেচ কাজ শেখার জন্য ২৪ জন কর্মকর্তা যেতে চান কানাডা, নেদারল্যান্ডস, মিসর, তুরস্ক, জাপান বা জার্মানিতে। তাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। অভিজ্ঞতা নিয়ে এসে তারা কৃষকদের সেচ বিষয়ক জ্ঞানদান করবেন। অন্য দিকে প্রকল্পে খাল পারাপারের জন্য প্রতিটি খালে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ হবে। আর প্রতিটি নলকূপ পুনঃ খনন এবং কমিশনিংয়ে যাবে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। তবে বিদেশ সফর ও অন্যান্য ব্যয় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আপত্তি রয়েছে। তারা মন্ত্রণালয়কে খরচগুলো পর্যালোচনা করে যৌক্তিক করার জন্য বলেছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বলেছেন, বিদেশ প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো আমরা অনুমোদন দেবো না। বাতিল করে দেবো।


কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। দ্রুত নগরায়নের ফলে ক্রমেই কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। অন্য দিকে, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান দিতে খাদ্য চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। দেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান উৎপাদনে পানির ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধির কারণে শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির অভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। এমতাবস্থায় কৃষি কাজে সেচের পানি ব্যবস্থাপনার তাৎপর্য উঠে এসেছে। কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার ২৩ উপজেলায় সেচের মাধ্যমে হাওর এলাকার ভূ-উপরিস্থিত পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অতিরিক্ত ৭১ হাজার ১২৬ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে বাড়তি ১২ হাজার ৯৩২ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করা হবে। এ জন্য সেচ কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন এবং প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। প্রকল্প এলাকায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আর এ জন্য কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকায় ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। মোট ৪৪৭ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে। পাঁচ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন।


প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো হলো- ১৩০ কিলোমিটার খাল পুনঃ খনন, ১১০ কিলোমিটার গোপাট নির্মাণ, ১০টি থ্রেসিং কাম সানিং ফ্লোর নির্মাণ, ৫ কিলোমিটার নদী থেকে সংযোগ খাল ড্রেজিং, ২০০টি ছোট সেচ অবকাঠামো নির্মাণ (ওয়াটার পাস, ক্যাটল ক্রসিং), ১৫০টি মাঝারি সেচ অবকাঠামো বা খাল পারাপার সেতু নির্মাণ, ৬০টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপন বা পুনঃ খনন, ৪২১ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ, ১৫০টি পাম্প হাউজ নির্মাণ, ২১০টি বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ, ৭৮০টি খাল পাড়ে জল নির্গমন পথ নির্মাণসহ মোট ২৬টি কার্যক্রম সম্পন্ন করা।
প্রস্তাবনায় খরচের হিসাব পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই সেচ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে বিদেশে প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা সফরে যাবেন প্রকল্পের সাথে জড়িত প্রকৌশলী, কর্মকর্তারা। তিনটি গ্রুপে ৮ জন করে মোট ২৪ জন ছয়টি দেশে যাবেন। এদের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে জনপ্রতি ৮ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কিন্তু অর্থনৈতিক সঙ্কটের এই মুহূর্তে বিদেশ প্রশিক্ষণের নামে এই ট্যুর নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তি। কেননা সরকারি গেজেট করে এসব বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে সেচ সম্পর্কে জানতে বিদেশ সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


জানা গেছে, প্রকল্পে ১৫০টি খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হবে, যা শুধু পারাপারের জন্য। আর এই সেতু প্রতিটির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। এই খাতে মোট খরচ হবে সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা। যা শহরের ফুটওভার ব্রিজের চেয়েও ব্যয় বেশি বলে কমিশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন। আবার নলকূপ পুনঃ খনন ও কমিশনিংয়ে ব্যয় হবে ৬০টির জন্য ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এতে প্রতিটিতে ব্যয় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। অন্য দিকে, ২০০টি ছোট সেচ অবকাঠামো নির্মাণ (ওয়াটার পাস, ক্যাটল ক্রসিং) করতে খরচ হবে ১৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এখানে প্রতিটির পেছনে ব্যয় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কিলোমিটার খাল পুনঃ খননে ব্যয় ২২ লাখ টাকা ধরে ১৩০ কিলোমিটারে খরচ ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৫ কিলোমিটার সংযোগ খাল ড্রেজিং-এ ব্যয় ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ৪৪ লাখ টাকা।
বিদেশ সফরের ব্যাপারে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো: মামুন-আল-রশীদের কাছে গতকাল তার মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, এসব বিদেশ ট্যুর বা প্রশিক্ষণ আমরা বাতিল করে দেবো। এখন এসবের কোনো দরকার নেই। খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণে খরচের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা আমাদের দেখতে হবে খালের চওড়া কতটা, কী ধরনের মেটারিয়াল দিয়ে এবং কতটা উচ্চতায় এসব ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তার উপর নির্ভর করছে ব্রিজের ব্যয়। আমরা পিইসিতে প্রতিটি খরচই চুলচেরা বিশ্লেষণ করবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে

সকল