২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তিন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রবাসীর ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

-

লন্ডন প্রবাসী গ্রাহকের প্রায় ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা। ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ার পর ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকি টাকা না দিয়ে সটকে পড়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ব্যাপারে তিনি একাধিক মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকেও। সব জায়গা থেকে তার পক্ষে রায় এলেও টাকা ফিরে পাচ্ছেন না।
সিলেটের বাসিন্দা আবদুর রউফ লন্ডন যাওয়ার আগে ২০১২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ওয়ান ব্যাংকের ইসলামপুর শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। ওই শাখার ক্যাশ অফিসার সরফরাজ আলী ওরফে পাপলু এক সময় তার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তার সহযোগিতায় হিসাব খুলে লন্ডনে যান আবদুর রউফ। এরপর থেকে ওই অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে থাকেন তিনি। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে তার হিসাবের বিবরণী তুলে দেখতে পান হিসাব থেকে তার স্বাক্ষর জাল করে তার সব টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। স্বাক্ষর জাল করে নতুন একটি চেক বইও তোলা হয়েছে। পরে ব্যাংক কর্মকর্তা সরফরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় সরফরাজ ২৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দেন আবদুর রউফকে। বাকি টাকা ছয় মাসের মধ্যে দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে নানাভাবে তাকে হয়রানি শুরু করেন সরফরাজ। এ ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ দিলে দুদককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রায় দুই বছর তদন্ত শেষে ১৮ মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।
দুদকের সিলেটের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন তার প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রবাসী আবদুর রউফ লন্ডনে থাকা অবস্থায় তার স্বাক্ষর জাল করে নতুন চেক বই তুলে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৮৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা তুলে নেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। এরা হচ্ছেন- তৎকালীন সিলেটের ইসলামপুর শাখার ক্যাশ অফিসার সরফরাজ আলী (পাপলু), একই শাখার সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও ম্যানেজার অপারেশন জাবেদ এমদাদ চৌধুরী (বর্তমানে অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাউথবাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, বারুতখানা শাখা) ও একই শাখার সাবেক অফিসার/কাস্টমার সার্ভিস অফিসার দিলীপ কুমার ভট্টাচার্য (বর্তমানে ওয়ান ব্যাংকের লাল দিঘীরপাড় শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার)।
তদন্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেছেন, হিসাবধারীর চেক বই চালু থাকলেও একে অপরের যোগসাজশে নতুন চেক বই উত্তোলন করেছে। সরফরাজ সেই চেক বইয়ের ২৩টি পাতায় আবদুর রউফের স্বাক্ষর জাল করে স্বাক্ষর শনাক্তকারী ব্যাংক কর্মকর্তা দীলিপ কুমার ভট্টাচার্য ও জাবেদ এমদাদ চৌধুরীর সহযোগিতায় উপস্থাপন করে ৮৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা তুলে নেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে এ তিন কর্মকর্তাকে দায়ী করে বলা হয়েছে এরা পারস্পরিক যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement