২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর্সেনিকমুক্ত পানি প্রকল্পে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি, অনুসন্ধানে দুদক
-

পাবনার সুজানগর পৌরসভার আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহ ও পানি নিষ্কাশন প্রকল্পে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। একই সাথে দুর্নীতির বিষয় অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পাবনার সুজানগর পৌরসভার আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহ ও পানি নিষ্কাশন প্রকল্পে কাজ না করেই পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। এ ঘটনায় সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে খুলনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জামানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি সুজানগর পৌরসভায় এ তদন্তে যান।
গত ১৯ জুলাই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ পাস-১ শাখার উপসচিব পঙ্কজ ঘোষ স্বাক্ষরিত পত্রে এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এ তদন্ত কমিটি সুজানগরে সরেজমিন তদন্ত করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এ প্রকল্পে ব্যাপক আর্থিক লোপাটের সত্যতা পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সরকার ২০১১-১২ অর্থবছরে সুজানগর পৌরসভায় আসেনিকমুক্ত সুপেয় পানি ও নিষ্কাশন ব্যবস্থায় পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পে ২০০ মিলিমিটার ব্যাসের এক দশমিক ১০ কিলোমিটার, ১৫০ মিলিমিটার ব্যাসের ৪ দশমিক ৪২ কিলোমিটার, ১০০ মিলিমিটার ব্যাসের ২৩ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন, পাঁচটি উৎপাদক নলকূপ, পাঁচটি পাম্প ঘর, পাঁচটি পাম্প ও মোটর ক্রয়, সারফেস ড্রেন পাঁচ কিলোমিটার, ডাস্টবিন ১২টি, পাবলিক টয়লেট চারটি, ৩০টি তারা নলকূপ স্থাপন, পাঁচটি অটো ভোল্টেজ রেগুলেটর ক্রয়, দু’টি কম্পিউটার ও এক হাজার ৪২৫টি বাড়িতে পানির মিটার সংযোগের সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র জানায়, পাবনার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে খুলনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জামানুর রহমান এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হন। পিডি নিজেই টেন্ডার আহ্বানকারী ও বিল পরিশোধকারী হওয়ায় তিনি তৎকালীন সুজানগর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী ও পছন্দের পাবনার ঠিকাদারকে দিয়ে যেনতেনভাবে পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ টাকা খরচ দেখান। নিম্নমানের পাইপ দিয়ে লাইন বসানোয় পানি ছাড়ার সাথে সাথে তা ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় নির্মাণের পর থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ডিপ টিউবওয়েল বসানোর পরপরই তাও অকেজো হয়ে আছে। এমনকি নির্মাণের পর থেকে দু’টি পাম্প হাউজে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও বিদ্যুতের মাধ্যমে পাম্প ও মোটর সচল দেখিয়ে এবং প্রকল্পের অন্যান্য কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১৫ সালের জুন মাসের ২৯ তারিখের মধ্যেই পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement