২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বগুড়ায় চালের বাজার অস্থির ডিম, মরিচে দিশেহারা মানুষ

বগুড়ায় চালের বাজার অস্থির ডিম, মরিচে দিশেহারা মানুষ -

বগুড়ায় চালের বাজার আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। সেই সাথে ডিমের দাম হালি ৪৩-৪৫ টাকা এবং কাঁচামরিচ ভারত থেকে আমদানি শুরু হলেও ঝাঁজ কমছে না। এমন অবস্থায় বাজারে গিয়ে দিশেহারা অবস্থা মধ্যবিত্ত ও নিম্নশ্রেণীর মানুষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দামের সাথে পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে বগুড়ায় চালের বাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী। গত পাঁচ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বাজারে নাজিরশাইল গত সপ্তাহে ৬২ থেকে ৬৪ টাকা থাকলেও এখন ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, যা ছিল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা। বিআর২৮ ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। কাটারিভোগ ৬৮ থেকে ৭০ টাকা থাকলেও এখন ৭২-৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রণজিৎ চাল পাইকারি বাজারে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৭ টাকা। এ ছাড়া বিআর২৯ গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৫২ টাকা থাকলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকায়। পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে এসব চাল বিক্রি হয় কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা বেশি। গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের ফতেহ আলী বাজার, মালতিনগর বকসিবাজারে পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা এসব তথ্য জানান। বাজারের চাল ব্যবসায়ী মিন্টু বাবু জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।


চালের ক্রেতা শহরের সূত্রাপুরের বাসিন্দা তরুণ মিয়া বলেন, চালের বাজার যেভাবে অস্থির হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালের কেজি ১০০ টাকাতেও উঠতে পারে। কারণ জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ধান চাষে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এতে নিম্ন ও মধ্যম শ্রেণীর মানুষের দুবেলা ভাত খাওয়া কঠিন হবে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আশ্রাফুজ্জামান বলেছেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়ানোর সুযোগ নিচ্ছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এ দিকে পাঁচ দিন ধরে ডিমের দামও বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। কয়েকদফা দাম বেড়ে বগুড়ায় প্রতি হালি সোনালী জাতের মুরগির ডিম এখন ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহে হালিপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ৮ টাকা।
ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাত্র এক সপ্তাহ আগে ৩৭ টাকা হালি দামে সোনালি মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে সেই ডিম পাইকারি বাজারে হালিতে ৮ ও খুচরা বাজারে ১১ টাকা বাড়তি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ডিম ব্যবসায়ীদের দাবি, কোম্পানিগুলো থেকে বাড়তি দামে ডিম ক্রয় করতে হচ্ছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। এ ছাড়াও মুরগির খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমের বাজার এখন নাগালের বাইরে।
বগুড়া শহরের ৩ নম্বর রেল ক্রসিং এলাকার ডিম ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল বাজারে লেয়ার লাল মুরগির ১০০ ডিম বিক্রি হয় ১১২০ টাকা দরে। এই ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। এই বাজারে লেয়ার মুরগির পাশাপাশি সাদা কক মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা হালিতে। এই মুরগির ডিমের ক্রেতা কম। এ ছাড়া শহরের মুদি দোকানগুলোতে লেয়ার মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। শহরের ৩ নম্বর রেল ক্রসিং এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ। তিনি জানান, ডিম বিক্রি করে আমাদেরও লাভ হচ্ছে না। প্রতি ১০০ পিস ডিমে আমরা লাভ করছি ১২ টাকা। এ ছাড়া দেশী হাঁসের ডিম ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপর দিকে ভারত থেকে কিছু পরিমাণ কাঁচামরিচ বগুড়ার বাজারে এলেও দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। গতকাল বগুড়ার বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বেচাকেনা হয়েছে ২০০-২৪০ টাকা। তাই বাজারে গিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের দিশেহারা অবস্থা।

 


আরো সংবাদ



premium cement