২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
এনপিপির আলোচনা সভা

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে : মির্জা ফখরুল

-

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কারণ এ সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবে না। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের একটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এই সভার আয়োজন করে।
এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা আবদুল হালিম, জাগপা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, কৃষকদলের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টি এস আয়ুব, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অহিদুজ্জামান দিপু প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের রাহু থেকে জনগণকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপি কোনো ব্যক্তি বা দলকে ক্ষমতায় বসাতে নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে নেমেছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর প্রধান বিচারপতি বিবৃতি না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সুপ্রিম কোর্টে ঢুকে হামলা করেছে। অথচ প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা একটি বিবৃতি পর্যন্ত দিলেন না। কারণ সরকার আজকে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের গুন্ডারা। শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদের ওপরও হামলা করেছে ওরা। মেয়েদের একজন আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। ছাত্রলীগ লাঠি নিয়ে রাজপথে যেভাবে প্রতিপক্ষকে পিটিয়েছে, তা দেখে পল্টনে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার পৈচাশিকতা পুনরাবৃত্তি বলে মনে হয়েছে। এটাই হলো আওয়ামী লীগের চরিত্র। তারা একটি সন্ত্রাসী দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকেও টিকতে দেয়নি। দলের কাউন্সিলে তাকে হেনস্থা করা হয়েছিল। তিনি বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করেন। গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। আমি নিজে বহুবার কারাগারে গেছি। এ অবস্থার অবসান হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। সুতরাং শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোট বিশেষভাবে এনপিপি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েই আমরা নির্বাচনে যাব ইনশাআল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।


আরো সংবাদ



premium cement