উন্নয়ন ব্যয় দু’লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি
প্রকল্পে বরাদ্দ ৫৮ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা ; ১০ মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৩৯ কোটি ; পিপিপিতে এবার থাকছে ৭৭টি প্রকল্প; বাস্তবায়নে ৯৩ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ১৮ মে ২০২২, ০২:৫৬
দশটি প্রকল্প এবং পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ দিয়ে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দু’লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত অনুমোদন পেল। এডিপি বাস্তবায়নে বৈদেশিক খাত থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হবে। ১০ প্রকল্পে বরাদ্দ ৫৮ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। আর শীর্ষ ১০ মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) এবার ৭৭টি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তবে এবার প্রকল্প কমিয়ে এক হাজার ৪৪০টি করা হয়েছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানান।
প্রধানমন্ত্রী ও এনইসির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী যুক্ত হয়ে শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষ ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এডিপিতে সরকারি অর্থায়নের অংশ এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, আর বৈদেশিক ঋণের অংশ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এ থদুই অংশ মিলে মূল এডিপি দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এর সাথে বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ৯ হাজার ৯৩৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সব মিলয়ে এডিপির আকার দুই লাখ ৫৬ হাজার তিন কোটি টাকা। আর প্রকল্পের মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প এক হাজার ২৪৯টি, কারিগরি সহায়তা ১০৬টি এবং সংস্থার ৮৫টি।
খাতভিত্তিক বরাদ্দ : পরিবহন ও যোগাযোগ; সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৯৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের প্রায় ২৯ শতাংশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ হাজার ৪১২ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৬ শতাংশ। শিক্ষা খাতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা ৩৮ লাখ টাকা, মোট বরাদ্দের প্রায় ১২ শতাংশ। গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাদিতে ২৪ হাজার ৪৯৭ কোটি ২২ লাখ টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ১৯ হাজার ২৭৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, কৃষি খাতে ১০ হাজার ১৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদে ৯ হাজার ৮৫৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে পাঁচ হাজার ৪০৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে চার হাজার ১৬৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় তিন হাজার ৬০৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, সাধারণ সরকারি সেবায় দুই হাজার ৮৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, প্রতিরক্ষা খাতে এক হাজার ২৭০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদনে দুই হাজার ৩৬৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে দুই হাজার ৫৬৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দে শীর্ষে ১০ মন্ত্রণালয় : বরাদ্দে স্থানীয় সরকার বিভাগে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৩১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগে ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১৬ হাজার ১১ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ১৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১৪ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে ১৪ হাজার এক কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগকে ১১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা, সেতু বিভাগকে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সাত হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০ প্রকল্প : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এডিপিতে এই প্রকল্পে ১৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আট হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টে বরাদ্দ ছয় হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) বরাদ্দ ছয় হাজার ১৯ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু রেল সংযোগে বরাদ্দ পাঁচ হাজার ৮০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ডব্লিউবি-জিওবি) বরাদ্দ চার হাজার ২৫৪ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণে বরাদ্দ প্রায় তিন হাজার ৮৫১ কোটি টাকা, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বরাদ্দ তিন হাজার ৭০৩ কোটি টাকা, এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া বরাদ্দ তিন হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) বরাদ্দ প্রায় দুই হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা।
আর উন্নয়ন সহায়তা খাতে বরাদ্দ দেয়া হবে চার হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তায় এক হাজার ১৫৯ কোটি টাকা, ইউপির জন্য উন্নয়ন সহায়তা সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা, উপজেলাকে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা, জেলা পরিষদকে ৫০০ কোটি টাকা, পৌরসভাকে ৪০০ কোটি টাকা, সিটি করপোরেশনকে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সহায়তা ২৮০ কোটি টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকারকে ৯০ কোটি টাকা এবং থোক ১০০ কোটি টাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা