২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনে শেয়ারবাজার

ডিএসইর সূচক আরো ২৭ পয়েন্ট কমেছে
-

আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবারও দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। এতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। সূচকের পতনের সাথে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইর পাশাপাশি দেশের অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
এ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সব ক’টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এর পরেই বদলে যায় বাজারের চিত্র। বাছ-বিচারহীনভাবে দাম কমতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের। ফলে দেখতে দেখতে বড় পতন হয় মূল্যসূচকের।
দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১১২ পয়েন্ট পড়ে যায়। এ সময় এক ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। তবে লেনদেনের শেষ আধা ঘণ্টায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার হার কমে। এতে বড় পতন থেকে রক্ষা পায় সূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৪০৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। এ পাঁচ দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২৯৫ পয়েন্ট। এমন টানা পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি গত বছরের ২৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৫টির। আর ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৪৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিন পুকুর সিরামিকের ৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ স্যালভো কেমিক্যাল, ফু-ওয়াং সিরামিক, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মা, ফরচুন সুজ, এসিআই ফরমুলেশন এবং ইউনিক হোটেল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৬টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আইসিবি ঋণ নবায়ন : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ম্যাচিউরড (পরিপক্ব) ঋণ নবায়নের কার্যকরি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটিকে এই মুহূর্তে ঋণ পরিশোধ করতে শেয়ারবাজারে সিকিউরিটিজ বিক্রির চাপে পড়তে হবে না। বরং প্রতিষ্ঠানটিকে বিনিয়োগ বাড়াতে বা সিকিউরিটিজ কিনতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরো ৫০ কোটি টাকা দেয়া হবে।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধস, ডলার জটিলতা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে কয়েক দিন ধরে শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে আবার আইসিবির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ৭০০ কোটি টাকার ম্যাচিউরড ঋণ সেই মন্দায় আরেক মাত্রা যোগ করে। যাতে করে সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১৩৫ পয়েন্টের বড় দরপতন হয়। এই পরিস্থিতিতে আইসিবির ম্যাচিউরড ঋণ নবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement