২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত

সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন: ডা: জাফরুল্লাহ

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী : নয়া দিগন্ত -

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, এই সরকার আমাদের বাদড় খেলা দেখাচ্ছে, এ সরকার মনে করে আমরা সবাই বোকা। আমলা দিয়ে দেশে কখনো সুশাসন হয় না। আমলা দিয়ে সুশাসন কায়েম করা যায় না, ধান্দাবাজি করানো যায়। আজকে এই আমলারা যারাই আপনার সাথে মিনমিন করছে তারা একটা সময় আপনাকে বেঁধে নিয়ে আসবে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার মিলনায়তনে মওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক হাবীবুর রহমান রিজুর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনে সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে ডা: জাফরুল্লাহ বলেন, ছাত্ররা আন্দোলন করছে ভার্সিটির ভিসি পুলিশ দিয়ে ছাত্রদের মেরেছে। এটাই যথেষ্ট তিনি আজকেই পদত্যাগ করে ছাত্রদের বলবেন আমার ভুল হয়েছিল। এর জন্য তাকে ক্ষমা চাওয়া উচিত। পুলিশ দিয়ে কেনো তাদেরকে পেটানো হবে? ভিসির অপরাধ কী আছে সেটা আমি দেখতে চাই না শুধু পুলিশ দিয়ে ওদেরকে পেটানোর জন্য ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি মনে করি এই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। কারণ শিক্ষামন্ত্রী তাদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। অথচ শিক্ষামন্ত্রীর উচিত তাদের কাছে গিয়ে মীমাংসা করে দেয়া। আজ মওলানা ভাসানী থাকলে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। এসব ব্যাপারে আমরা কথা বলতে পারছি না সব জায়গায় বাঁধা। তিনি বলেন, সরকারের জবাবদিহিতা নেই। জনগণের মুখের কথা একমাত্র মওলানা ভাসানী আমাদের শিখিয়ে গেছেন। কিন্তু তাকে আমরা ভুলে গেছি। আজকে সরকারিভাবে ভাসানীর জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন হয় না পত্রপত্রিকায়ও সেভাবে উল্লেখ নেই। আজকে আমাদের দেশে গণতন্ত্র ও মজলুমের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটা সঠিক নির্বাচন দরকার।
ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবী আমাদের গণতন্ত্র হরণ, খুন-গুম, আমাদের অধিকার, দুর্নীতি সবকিছুই জানে। এখন এই বিষয়গুলোর ইস্যুতে আমাদের মিলিতভাবে সংগ্রাম গড়ে তোলা ছাড়া মুক্তি আসবে না। আগামী নির্বাচন পূর্ববর্তী দুই নির্বাচনকেও ছাড়িয়ে যাবে। একটা পরিকল্পনা হলো নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকদের ব্যবহার করা হবে এবং জেলা প্রশাসকেরা তো অনুগত আছেই। এসব ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। আমি মনে করি না যে তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে। অন্তত দুই বছরের জন্য একটা জাতীয় সরকার বা সর্বদলীয় সরকার দরকার।
অনুষ্ঠানে মওলানা ভাসানীর স্মৃতিচারণ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি স্বদেশের মাটিতে ফিরেন। তখন তার স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ছিল না। দেশে ফেরার আগে তিনি ১৯৭২ সালের ২১ জানুয়ারি আসামের ফরিদগঞ্জে এক জনসভায় দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, পাকিস্তানের বর্বরতা ও ২৩ বছরের শোষণের চিত্র তুলে ধরেছিলেন। পরদিন ২২ জানুয়ারি মেঘালয় থেকে তিনি ভারত সরকারের একটি জিপে বাংলাদেশের হালুয়াঘাটে পৌঁছেন। তার সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন চিকিৎসকও ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement