২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২ বাসের পাল্লাপাল্লিতে প্রাণ গেল কিশোরের

-

রাজধানীর ওয়ারীর জয়কালী মন্দিরের কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে ইরফান আহমেদ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অপর দিকে রাজধানীর মগবাজার মোড়ে দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে চাপা পড়ে মারা গেছে রাকিব (১৪) নামে এক কিশোর।
সকাল ১০টার দিকে জয়কালী মন্দিরের কাছে রাস্তায় ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডার জেরে বাসের হেলপার চলন্ত অবস্থায় বাস থেকে ধাক্কা দেয় ইরফানকে। এতে ইরফান ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে সংজ্ঞা হারান। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাসটিকে আটক করেছে। তবে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
পুলিশ ও ইরফানের পরিবার জানায়, পুরান ঢাকার নবাবপুরের একটি ইলেকট্রিকের দোকানে কাজ করতেন ইরফান। তিনি পরিবার নিয়ে ডেমরার শারুলিয়ার বড়ভাঙ্গা এলাকায় থাকতেন। ইরফানের বাবার নাম আলমগীর হোসেন। ইরফান এক কন্যাসন্তানের বাবা। ইরফান সকালে ডেমরার শারুলিয়া এলাকা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রীবাহী একটি বাসে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গ্রিন বাংলা নামের বাসটি গুলিস্তানের জয়কালী মন্দিরের কাছে পৌঁছালে ইরফানকে বাস থেকে সড়কে পড়ে যেতে দেখা যায়। পথচারীরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কাছের সালাউদ্দিন হাসপাতালে নেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে বেলা পৌনে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ইরফানের স্ত্রী ইসমত আরা ও ভাই রায়হান আহমেদ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় রায়হান অভিযোগ করেন, তার ভাইয়ের সাথে বাস চালকের হেলপারের কথা-কাটাকাটি হয় বলে তারা জানতে পেরেছেন। এর জের ধরে চালকের সহকারী তার ভাইকে বাসের দরজা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, ইরফানের মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও জখম বা আঘাতের চিহ্ন নেই। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন।
ওয়ারী থানার এসআই আরাফাত হোসেন বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তারা শুনেছেন, বাসচালকের হেলপারের সাথে ইরফানের কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। তার মাথার পেছন দিকে আঘাতের চিহ্ন আছে। তদন্ত করার পর পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে। পোস্টমর্টেমের জন্য ইরফানের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ দিকে মগবাজার মোড়ে আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে পিষ্ট হয়ে মারা গেছে কিশোর রাকিব। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, মগবাজার মোড়ে আজমেরী পরিবহনের একটি বাস ও অন্য একটি বাসের মাঝখানে পড়ে গুরুতর আহত হয় কিশোর রাকিব। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পৌনে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মগবাজার মোড়ে কে আগে আসতে পারে সেজন্য আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের দুটি বাস একে অন্যকে পেছনে ফেলতে রেষারেষিতে জড়ায়। বাস দুটি মগবাজার মোড়ে এসে সমান্তরালভাবে এগোনোর চেষ্টা করলে বাস দুটির মাঝখানে পড়ে প্রাণ হারান রাকিব।
রাকিবের বাবা নূর ইসলাম হাসপাতালে জানান, মগবাজার মোড়ে মাস্ক বিক্রি করত রাকিব। প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে মাস্ক বিক্রির জন্য বের হয় সে। বিকেলে তিনি খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন ছেলের নিথর দেহ পড়ে আছে।
তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গাছুয়া পাড়ায়। বর্তমানে মগবাজার পেয়ারাবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রাকিব দ্বিতীয় ছিল।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ঘাতক বাস দু’টি জব্দ করা গেলেও চালক ও তার সহযোগীরা পালিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement