১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না গণপরিবহনে

একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয়; জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা
-

প্রথম দফার ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শনিবার থেকে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের কথা ছিল গণপরিবহন। কিন্তু পরদিন দ্বিতীয় ঘোষণায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। প্রতি আসনে যাত্রী নেয়ার অনুমতি দেয়া হলেও নির্দেশনা ছিল পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। কিন্তু কোথাও তা মানা হচ্ছে না। দূরপাল্লার কয়েকটি পরিবহনে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও রাজধানীতে চলাচলরত বাসগুলোর অবস্থা হযবরল।
হেলপাররা মাস্ক পরা ছাড়াই আগের মতো দরজায় দাঁড়িয়ে হাঁকডাক দিয়ে টেনে তুলছেন যাত্রীদের। যাত্রীরাও কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়া যে যেভাবে পারছেন হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ছেন বাসে। ভেতরে গিয়ে ভুলে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যবিধির কথা। যাত্রীদের মধ্যে দুই-একজন নিজ উদ্যোগে মাস্ক পরলেও বেশির ভাগই উদাসীন। কেউ কেউ আবার মাস্ক পরার ঘোর বিরোধিতা করেছেন। তবে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ও সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন অথোরিটি (বিআরটিএ)।
গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট, শাহবাগ, মোহাম্মদপুর, পল্টন মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাসেই সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলকারী ভূঁইয়া পরিবহনের একটি বাসের হেলপার সুজন মাস্ক পরা ছাড়াই যাত্রী ডেকে বাসে তুলছিলেন। তার কাছে গিয়ে কথা বলতে চাইলেই তিনি পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরে নেন। তিনি জানান, বাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে, যাত্রীরা চাইলে দেয়া হচ্ছে। যাত্রীদের মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। নিজে পরেননি কেন জানতে চাইলে বলেন, যাত্রী ডাকার সময় মাস্ক পরলে শব্দ বেশি দূরে যায় না। ওই বাসে থাকা মাস্কবিহীন এক যাত্রীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
এ দিকে গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএর উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো: হেমায়েত উদ্দিন। তিনি বলেন, সড়কে পরিবহন আইন ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা তা দেখতে আমাদের ১০টির মতো ভ্রাম্যমাণ আদালত সড়কে কাজ করেছে। এসব আদালতের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শাহবাগ, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনাল, মতিঝিল, রমনা, ওয়ারী, চকবাজার, গেণ্ডারিয়া, ডেমরা, বংশাল, লালবাগ, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, হাজারীবাগ ও সদরঘাট ও এর আশপাশ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এলাকায় পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত-৪। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজা পারভিন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন মনিরার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত-৫ এর অভিযান পরিচালিত হচ্ছে ইসিবি চত্বর, বনানী, কাকলী রেলস্টেশন এলাকা, মহাখালী বাস টার্মিনাল, গাজীপুর সড়কে সিটি করপোরেশন সীমানা এলাকা, ৩০০ ফিট এলাকা এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কে সিটি সীমানা ও এর আশপাশ এলাকায়। দিয়াবাড়ী, জোয়ারসাহারা, খিলক্ষেত, ঢাকা-আব্দুল্লাহপুর সড়কে সিটি করপোরেশন সীমানা এবং উত্তরা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত-৬ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। একইভাবে তেজগাঁও, ফার্মগেট, আদাবর, কলাবাগান, ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট, মোহাম্মদপুর, বসিলা ব্রিজ, বাবু বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত-৭ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাকিলা বিনতে মতিনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত-৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে মিরপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী বাস টার্মিনাল এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সিটি করপোরেশন সীমানা এলাকায়। আর গুলশান, ভাটারা, বাড্ডা, শাহাজাদপুর এবং রামপুরা ও এর পাশের এলাকা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ১০-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জুবের আলীর নেতৃত্বে অভিযান চলছে। এ ছাড়াও চট্টগ্রামে দু’টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement