লেনদেন ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে

টানা বড় দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। সেই সঙ্গে বড় পতন হয়েছে সব ক’টি মূল্যসূচকের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় দরপতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। গতকাল ডিএসইর সূচক কমেছে ৬৫ পয়েন্ট। আর সিএসইতে কমেছে ২১১ পয়েন্ট।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই মূল্যসূচকের ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যায়। লেনদেন শুরুতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫ পয়েন্ট বাড়লেও ১০ মিনিটের মাথায় ২৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। অবশ্য এরপর সূচক আবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়। ফলে প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৫ পয়েন্ট। কিন্তু এ দফাতেও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বেশি সময় স্থায়ী থাকেনি। বেলা ১১টার পর থেকে লেনদেনে অংশ নেয়া একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে সূচকের বড় পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪১টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৪৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ১২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৭৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর আগে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল ডিএসইতে ৯৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর গতকালের আগে বাজারটিতে আর হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হয়নি।
লেনদেন খরার বাজারে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৭ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওয়ান ব্যাংকের ৬০ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ আইএফআইসি ব্যাংক, জিনেক্স ইনফোসিস, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ফরচুন সুজ, এনআরবিসি ব্যাংক, সাইফ পাওয়ারটেক এবং ওরিয়ন ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) গতকাল সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্লক মার্কেট : প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে বৃহস্পতিবার ২৬টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ২৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। জানা গেছে, কোম্পানিগুলোর ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৪টি শেয়ার ৫৪ বার হাত বদলের মাধ্যমে ২৭ কোটি ৩২ লাখ ১৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৫ কোটি ৫১ লাখ ৩৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে লিনডে বিডির।