২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২৮ অক্টোবর পল্টনের ঘটনায় বিদেশী শক্তিও জড়িত ছিল : ডা: শফিকুর রহমান

-

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে সঙ্ঘটিত ইতিহাসের নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে একটি গভীর সঙ্কট সৃষ্টি করা হয়েছিল। সে দিনের এ ঘটনায় বাংলাদেশের মানবতা হেরে গেছে। সেদিন শুধু অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র-ই নয় বরং বিদেশী শক্তিও দেশকে নিয়ে ভয়াবহ খেলায় লিপ্ত হয়েছিল। দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে স্বমূলে নির্মূল করা ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। অন্য দিকে বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজ পুরো দেশকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এখন দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তো প্রতিটি দিন-ই হচ্ছে লগি-বৈঠার বর্বরতার ২৮ অক্টোবর। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বুঝতে হবে, জামায়াত নিয়ে সরকারের এত মাথা ব্যথার কারণ কী? আমরা বলতে চাই দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব ও কর্মী তৈরিকে বাধাগ্রস্ত করতেই মূলত তারা এ বর্বর হামলা চালিয়েছিল। অতীত থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি ২৮ অক্টোবরের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের শাহাদত কবুলের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মুনাজাত করেন।
গতকাল রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবে নির্মমভাবে শাহাদতবরণকারীদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা: আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আবদুস সবুর ফকির, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, আবদুস সালাম প্রমুখ।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামের ইতিহাস থেকে উহুদের যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়, যেখানে অনেক মুনাফিক যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেনি। উহুদের যুদ্ধে বাতিল কাফের শক্তি কেবল সাধারণ মুসলমানদের টার্গেট করেনি বরং প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ সা:-সহ ইসলামী নেতৃত্বকে দুনিয়ার বুক থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। ঠিক ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার পল্টনেও বাতিল শক্তির টার্গেট ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতবৃন্দকে হত্যা করা। দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার মাধ্যমে দেশে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে মুছে ফেলার ভয়াবহ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার চেষ্টা হয়েছিল সেদিন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। জামায়াতের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের যাকে যতটুকু মেধা ও যোগ্যতা দিয়েছেন তার পূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমেই দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের যোগ্যতার সঠিক ব্যবহার করছি কি না সেটাই মহান আল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমার কাছে থেকে জানতে চাইবেন। সেজন্য দেশ ও জাতির প্রয়োজনে আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কোরবানির প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্র্যাজেডির দিনে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দেশ রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে নিজ জীবনবাজি রেখে জমিন আঁকড়ে ছিলেন। সেদিন শুধু পল্টনে দাঁড়িয়ে থাকা জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীকে শহীদ করা নয় বরং সেদিনের পর থেকেই মূলত বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে। আজ তা স্পষ্ট হয়েছে, দেশে গণতন্ত্র নেই, কথা বলার অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই, ভাতের অধিকার নেই, নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণ আজ চরম ভাবে বিপর্যস্ত। এখানে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াত নেতাদের চোখের সামনে বাংলাদেশের একটা দুঃস্বপ্ন ভেসে উঠেছিল। গভীর ষড়যন্ত্রের বিষয়টি নেতৃবৃন্দ বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। মুহুর্মুহু গুলি, বোমা ও লগি-বৈঠার আক্রমণের মধ্যেও সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে জামায়াত নেতারা সেদিন পল্টনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ২৮ অক্টোবরের ধারাবাহিকতায় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সীমান্তকে অরক্ষিত করা হয়েছে । ফলে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ২৮ অক্টোবরের শহীদেরা হবে আমাদের প্রেরণার উৎস। আমাদের শহীদ নেতৃবৃন্দসহ সব জীবন দানকারী সাহসী ভাইয়েরা হবেন আগামীর দেশ গঠনে অনুপ্রেরণা। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল