২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জাতিসঙ্ঘ ও ইইউকে হিন্দু পরিষদের চিঠি

হিন্দুদের ওপর আক্রমণ তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের আহ্বান

-

ভারতের হিন্দুত্ববাদী সামাজিক সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণের ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য জাতিসঙ্ঘ, জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সংগঠনটি একইসাথে বাংলাদেশে তথ্যানুসন্ধান মিশন পাঠানো, হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিশ্ব সংস্থা ও ইইউ প্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে।
ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। চিঠিতে ভিএইচপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান স্বামী বিজ্ঞানন্দন বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা এবং জেহাদি সহিংসতায় জড়িত সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। তিনি শত্রু সম্পত্তি আইন-২০১৩ বাতিল করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন। তার মতে, এই আইন হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয়ার পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। কেননা এই আইনের আওতায় পালিয়ে যাওয়া হিন্দুদের সম্পত্তি প্রতিবেশীরা বৈধভাবে দখল করতে পারে।
প্রতিবেদনে সরকারি তথ্য সূত্রে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড় দুর্গাপূজা প্যান্ডেলে একটি কুরআন পাওয়াকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় অন্তত তিনজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দিলে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা ছাড়াও চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রংপুরে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের খরব আসে। কুমিল্লার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ চারটি মামলা করেছে এবং ৪১ জনকে গ্রেফতার করেছে।
চিঠিতে ভিএইচপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অবাধে গণহত্যা চলছে। গত ১০-১২ দিনে বাংলাদেশের ২২টিরও বেশি জেলায় নিরীহ ব্যক্তিদের ওপর বর্বর হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে, যা মানবতার যেকোনো মানদণ্ডকেই ক্ষুণœ করে। চরমপন্থী মুসলিমরা দুর্গাপূজা চলার সময়ে বিভিন্ন মন্দিরে আক্রমণ চালায়। এ সময় ১২ জনের বেশি হিন্দুকে গলা কেটে করে হত্যা করা হয়। আহত হন অনেকেই। হিন্দু নারী ও শিশুরা পরিবারের সামনেই ধর্ষিত হন। হিন্দুদের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নীরব ভূমিকা পালন করে। নৃশংসতার তদন্তও শুরু করা হয় অনেক দেরিতে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১২৫টিরও বেশি দেশে এই সংঘটনের কার্যক্রম চলছে। দলটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ দলের শাখা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এটি হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর মাতৃসংগঠন সঙ্ঘ পরিবারের অন্তর্গত। দলটির স্লোগান হলো ‘ধর্মকে সুরক্ষা করলে ধর্ম বাঁচে’। দলটির প্রতীক হলো বটগাছ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুব বাহিনীর নাম বজরং দল।


আরো সংবাদ



premium cement