২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গুচ্ছ’ ভর্তি পরীক্ষা শুরু

-

মহামারীর সময়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আর ঝুঁকি কমাতে দেশে প্রথমবারের মতো ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে শুরু হয়েছে ‘গুচ্ছ’ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা। প্রথম দিন গতকাল রোববার বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা হয়। তাতে অংশ নেন এক লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ জন শিক্ষার্থী। এক ঘণ্টার ভর্তি পরীক্ষায় তাদের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। এ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রকাশিত হবে মেধাতালিকা। গুচ্ছে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই মেধাতালিকা থেকে নিজেদের শর্ত পূরণসাপেক্ষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে।
গুচ্ছ পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান জানান, মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনায় সারা দেশে ২৮টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। একইভাবে আগামী ২৪ অক্টোবর মানবিক বিভাগ এবং ১ নভেম্বর বাণিজ্য বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা হবে।
গুচ্ছভুক্ত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে সব মিলিয়ে তিন লাখ ৬১ হাজার ৪০৬ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে আবেদন করেন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮৪১, মানবিক বিভাগে এক লাখ সাত হাজার ৯৩৩ এবং বাণিজ্য বিভাগে ৫৮ হাজার ৬৩২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তবে বিজ্ঞান বিভাগের এক লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ জন এবং মানবিক ও বাণিজ্যের সব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন।
গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হলোÑ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ইবি সংবাদদাতা জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্র্রে সাত হাজার ৮২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অ্যাকাডেমিক ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসনের সহযোগিতায় কাজ করে পুলিশসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট গ্রুপ। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেনÑ প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান প্রমুখ।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম দিনের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার হল পরিদর্শন শেষে খুবি ভিসি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শতভাগ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ পরীক্ষা গ্রহণ করছি। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমরা সন্তুষ্ট। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এবার বহুলাংশে ভোগান্তি কমেছে। তিনি বলেন, এবার বৃহত্তর পরিসরের এ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সাফল্যের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে আরো অনেক সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ সময় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. হোসনে আরা এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচ হাজার ২৯০ জন ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজে এক হাজার ৮১৮ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ‘ক’ ইউনিটে দুই হাজার ৩৯৪ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯৫.৫৬ শতাংশ। এ ছাড়া ১১১ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অ্যাকাডেমিক ভবনের ৫৪টি কক্ষে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ক’ ইউনিটের আহ্বায়ক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, সবার সহযোগিতায় পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু হয়নি। পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র সংগ্রহ থেকে পরীক্ষা সবকিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ দিকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। পূজা নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ায় আমাদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে গেছে। অন্তর নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতি আমাদের জন্য সুবিধা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু কোনো কারণে পরীক্ষা খারাপ হয়ে গেলে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির স্বপ্ন একবারে শেষ হয়ে যাবে।
রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা জানান, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গতকাল ‘ক’ ইউনিটের জিএসটি গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৮০০ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক’ ইউনিটের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদভুক্ত কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫০টি আসন, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স অনুষদভুক্ত ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগে ২৫টি আসন এবং ফিশারিজ অনুষদভুক্ত ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগে ২৫টি আসন রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল